Opposition meet in Bihar: বিরোধী জোটের সলতে পাকানো হবে বিহারে, মমতা-খাড়গেদের এক টেবিলে বসানোর ছক নীতীশের

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে উঠে পড়ে লেগেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সম্প্রতি তিনি কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে যান। উত্তরপ্রদেশে গিয়েও তিনি সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আগে দিল্লিতে গিয়ে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন নীতীশ। তবে এবার এই সকল বিরোধী নেতাদের এক টেবিলে বসানোর ছক কষছেন নীতীশ কুমার। এই আবহে কর্ণাটর বিধানসভা নির্বাচনের পর দেশের তাবড় বিরোধী নেতাদের বিহারে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নীতীশ কুমার।

মমতার মুখে বারংবার বিরোধী ঐক্যের কথা শোনা গেলেও সাম্প্রতিককালে কংগ্রেসের সঙ্গে অনেকটাই দূরত্ব বেড়েছে তৃণমূলের। গোয়া এবং মেঘালয়ে যেভাবে কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল নিজেদের দল ভারী করেছে, তাতে অসন্তুষ্ট হাত শিবির। এদিকে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ে তৃণমূলের বিরোধিতা করে আসছে কংগ্রেস। এই আবহে কংগ্রেসকে কথায় কথায় তোপ দাগতে শোনা গিয়েছে মমতা, অভিষেককে। তবে ২০২৪ সালে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হটাতে যে কংগ্রেসের সঙ্গ প্রয়োজন, তা হয়ত মমতাও জানেন। এই আবহে নীতীশের আমন্ত্রণে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে তিনি এক টেবিলে বসবেন কিনা, সেদিকে নজর রাজনৈতিক মহলের। তবে উল্লেখ্য বিষয়, মমতা নিজেই নীতীশকে সব বিরোধী দলের বৈঠক ডাকতে বলেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে হারাতে হয়ত কংগ্রেসের সঙ্গেই শেষ পর্যন্ত হাত মেলাতে পারে তৃণমূল। তবে সব কিছু সময়ই বলবে।

এদিকে জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ মে-এর পর যেকোনও সময় বিরোধী নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বিহারে। এই বৈঠকের চূড়ান্ত রূপরেখা অবশ্য এখনও তৈরি হয়নি। তবে এই বিষয়ে জেডিইউ সর্বভারতীয় সভাপতি লালন সিং বলেন, ‘এটা এখন প্রয়োজন। এবং বিরোধী নেতারা যেভাবে নীতীশ কুমারের ডাকে সাড়া দিয়েছেন, তাতে আমরা আশাবাদী। নীতীশ কুমার তাঁদের সবার সঙ্গেই দেখা করছেন। কথা বলছেন। কর্ণাটক নির্বাচনের পরে এই প্রচেষ্টায় গতি আরও আসবে।’ যদিও বিজেপি এই বিরোধী জোটকে ‘অসম্ভব’ আখ্যা দিয়েছে। তবে নীতীশ কুমার যে এই জোটের সলতে পাকাতে বদ্ধপরিকর, তা তাঁর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট।

সম্প্রতি তিনি দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে এই বৈঠকে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তেজস্বীকে নিয়েই নীতীশ দেখা করেন রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও। এরপর আম আদমি পার্টি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করেন নীতীশ। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআই নেতা ডি রাজার সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয় নীতীশ-তেজস্বীর। অখিলেশ, মমতার সঙ্গেও বৈঠক করেন এই দুই নেতা। তবে এর আগে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছিল তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকেও। তবে রাজ্যে তাঁর বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস। তাই তাঁকে মূলত তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার লক্ষ্যে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছিল। এদিকে বিহারে নীতিশ কুমারের সরকারের অংশ কংগ্রেস। এই আবহে নীতীশ কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলার পক্ষপাতী। অখিলেশ, মমতারা নীতীশের সঙ্গে বৈঠক তো করেছেন। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে কতটা সমঝোতা করতে তাঁরা প্রস্তুত, তা সময়ই বলবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নীতীশকে সব বিরোধী দলের বৈঠক ডাকতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোটের সলতে পাকানো শুরু হয়ে গিয়েছে বলে মত অনেকেরই।