Justice Abhijit Ganguly: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরল সব নিয়োগ মামলা? হাই কোর্টের ‘কজ লিস্ট’-এ কাটল ধোঁয়াশা

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এরপরই ধন্দ তৈরি হয়, তবে কি সব নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাই সরানো হল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে? তবে সিপিএম-এর রাজ্যসভা সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেছিলেন যে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা নয়, শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত মামলাটিই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের তরফে মে মাসের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতি বিকাশবাবুর কথাই ঠিক বলে মনে হচ্ছে। কারণ একটি ছাড়া শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বাকি সব মামলাই এখনও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রাখা হয়েছে।

গত শুক্রবার সুপ্রিম নির্দেশিকার পর জল্পনা তৈরি হয়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে কি সব নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সরে যাচ্ছে? নাকি শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা সরিয়ে নিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট? অবশেষে তা নিয়ে ধোঁয়াশা দূর হল। কলকাতা হাই কোর্টের মে মাসের ‘কজ লিস্টে’ দেখা গিয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষ সংক্রান্ত মামলা ছাড়া নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলাই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রয়েছে। এর আগে বিতারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সব মামলাই হয়ত তাঁর এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।

অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের লিখিত রায়ে বলা হয়েছিল, একটি মামলাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই আবহে শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা সরিয়ে নেওয়া হেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। বিচারাধীন বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কারণেই অভিষেক ও কুন্তলের মামলাটি সরেছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। প্রসঙ্গত, গত বছর একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যে বিষয়টি সম্প্রতি অভিষেকের দায়ের করা একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে উঠে আসে। সেই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের থেকে হলফনামা তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিংহের বেঞ্চ নির্দেশ দেয় মামলা সরানোর জন্য।

এর আগে কয়েক সপ্তাহ আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন যে কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁকে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে বিচারগতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যান অভিষেক। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের বিষয়টি তুলে ধরেন অভিষেকের আইনজীবী। বলা হয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, তাতে অভিষেকের প্রতি তাঁর বিরূপ মনোভাব ফুটে উঠেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই নির্দিষ্ট সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি সরানো হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে।