ভুয়ো স্ক্রিনশট বানিয়ে মাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল মেয়ে, হরিদেবপুরকাণ্ডে ইউ টার্ন

হরিদেবপুরে পরকীয়ার জেরে মায়ের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাটে আগুন ধরিয়ে ১৬ বছরের নাবালিকা মেয়েকে হত্যার চেষ্টার তদন্তে নেমে বিস্ফোরক দাবি করল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, মায়ের ফোন ক্লোন করে ভুয়ো স্ক্রিনশট বানিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিল মেয়ে। এর পর ১৬ বছরের ওই নাবালিকাকে গ্রেফতার করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, অসুস্থ পারিবারিক পরিবেশই কিশোরীকে এই ধরণের কাজ করার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হরিদেবপুর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, নাবালিকা মেয়েই মায়ের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ করে তাঁকে জেলে ভরতে চেয়েছিল। সেজন্য সে মায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেমিকের ভুয়ো স্ক্রিনশট বানায়। তার পর সেই স্ক্রিনশট দেখিয়ে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার FCI এর কর্মী সোনালী চন্দ ও তাঁর প্রেমিক বারাসত পুলিশ জেলার কন্সটেবল প্রসন্ন মান্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে সোনালীদেবী দাবি করেন, তিনি ও তাঁর মা ভোর রাতে গভীর ঘুমে ছিলেন। তখন ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। মেয়েই তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে। এর পর মা ও মেয়েকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেন তদন্তকারীরা। তাতেই নাবালিকার চক্রান্ত ফাঁস হয়ে যায়। এর পর ১৬ বছরের নাবালিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাল তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করা হবে।

সোমবার ভোর রাতে হরিদেবপুরের একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দমকল সেই আগুন নিভিয়ে আসে। দুপুরে ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা নাবালিকা হরিদেবপুর থানার দ্বারস্থ হয়ে দাবি করে, তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল মা সোনালী চন্দ। নাবালিকা দাবি করে, আগুন লাগার পর মায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেমিক প্রসন্ন মান্নাকে বলছিলেন আগুন লাগিয়ে দিয়েছি কিন্তু মেয়ে টের পেয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।

পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ইউটিউব দেখে টেলিগ্রামের ভুয়ো স্ক্রিনশট বানানো শিখেছিল নাবালিকা। সেই পদ্ধতিতে স্ক্রিনশট বানিয়ে প্রিন্ট করায় সে। সেই কাগজ নিয়ে হাজির হয় থানায়।

প্রতিবেশীরা বলছেন, মা – মেয়ের বিবাদে ওই ফ্ল্যাটের আসেপাশে কাক – চিল বসতে পারত না। করোনার লকডাউনের আগেও ফ্ল্যাটটিতে একবার আগুন লেগেছিল। আগে সোনালীদেবীর স্বামী ওই ফ্ল্যাটেই তাঁর সঙ্গে থাকতেন। তবে বর্তমানে একসঙ্গে থাকেন না তাঁরা।