তৃণমূলের প্রার্থী বাংলাদেশের নাগরিক! 

পশ্চিমবঙ্গের একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। ভোটে জিততে পারেননি। হেরে যাওয়ার পর গিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। ভোটের ফল নিয়ে বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছিলেন। তারই দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিলেন একুশের ভোটে বনগাঁ দক্ষিণের তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানো আলোরানি সরকার।

আলোরানির বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে একক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, দায়িত্বশীল দল হিসেবে কখনোই একজন বাংলাদেশিকে ভারতের রাজনৈতিক দলের প্রার্থী করা যায় না। তাকে ভারত থেকে বিতাড়িত করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লেখাও হয়েছিল। একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরাজিত প্রার্থী। এবার ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেলেন তিনি।

আলোরাণি সরকারের দায়ের করা নির্বাচনি মামলা বা ইলেকশন পিটিশন খারিজ করেছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, এই মামলা রক্ষণীয় নয়।

গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদারের কাছে ২০০৪ ভোটে পরাজিত হন আলোরানি মজুমদার। তারপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। গত বছর ২০ মে মামলা খারিজ করেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। নির্দেশে বিচারপতি বিবেক চৌধুরী জানান, বাংলাদেশের ভোটার লিস্ট আলোরানি সরকারের নাম রয়েছে, তাই তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করতে পারেন না।জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপের নির্দেশ দেন বিচারপতি চৌধুরী।

উল্লেখ্য, বিজেপি স্বপন মজুমদারের হয়ে মামলা লড়েছিলেন জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আইনজীবী জাগৃতি মিশ্র। তিনিই আদালতকে তথ্য দিয়ে জানিয়েছিলেন, আলোরানি বাংলাদেশের বাসিন্দা। বাংলাদেশে তার বিয়ে হয়েছে। সেখানেই তার স্বামী থাকেন।

এই তথ্যের ভিত্তিতে হাইকোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিলেন আলোরানি। বিচারপতি জানান, ভারতের সংবিধানে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোনও জায়গা নেই। ফলে মামলাকারী নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে দাবি করতে পারেন না। একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলোরানি সরকার। তাতে ডিভিশন বেঞ্চ মামলা শুনেই স্পষ্ট করে দেয়, এই মামলা রক্ষণীয় নয়। তার দায়ের করা নির্বাচন সংক্রান্ত পিটিশন খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।