Arun Haldar: রাজ্যে তফশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের ওপর জাতিগত নির্যাতন চলছে: অরুণ হালদার

রাজ্যে তফশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের ওপর জাতিগত নির্যাতন চলছে। প্রশাসনের একাংশের মদতে এই নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে দাবি করলেন জাতীয় তফশিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। রবিবার রাজভবনের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর একথা বলেন তিনি।

এদিন অরুণবাবু বলেন, তফশিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে রাজ্যে ২ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা জানাতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিলাম, ‘রাজ্যপাল আগে থেকেই বিষয়টা জানতেন। উনি যে এরকম করছেন এটা তো ভাবনারও বাইরে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে উনি কথা বলবেন। দরকারে প্রশাসনিক আধিকারিকদের ডেকে কী ভাবে SC – ST কমিশনের সাথে কাজ করতে হয় তা জানাবেন’।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন ময়নার ঘটনার তদন্ত করতে গেলাম তখন ওখানকার আইসির বিরুদ্ধেই মৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা অভিযোগের আঙুল তুললেন। আর সেরকম একজন আধিকারিককে পাঠালেন কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিতে। তাহলে আমি কার কাছে প্রশ্ন করব? রাতের অন্ধকারে, পরিবারকে না জানিয়ে যেভাবে ওখান থেকে লাশটাকে লোপাট করে নিয়ে যাওয়া হল। যে ভাবে রক্তটাকে বালি দিয়ে চাপা দিয়ে রাখল… ফরেন্সিক রিপোর্টে রক্তের নমুনা সংগ্রহ প্রয়োজন ছিল। সেসব না করে পিছনের দরজা দিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়া হল। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ ক্যাম্পটা এখান থেকে সরিয়ে দিন। এখানে বসেই খুনের পরিকল্পনা করা হয়’।

রাজ্য সরকারের প্রতি অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘গত ২ বছরে রাজ্য সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য বারবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু সরকারের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। এই রাজ্য ২২ শতাংশ তফশিলি সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর জাতিগত নির্যাতন হচ্ছে। আমি নিজের উদ্যোগে জেলায় গেলে জেলাশাসক পুলিশ সুপাররা কয়েক মিনিট বৈঠকে থেকে পালিয়ে যান। রাজ্যপালকে জানিয়েছি কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল। সেকথা রাজ্যপালকে জানিয়েছি। সঙ্গে কালিয়াগঞ্জ ও ময়নায় ৩ জন তফশিলি সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যুর পিছনে কী ভাবে প্রশাসন যুক্ত আছে তা ওনাকে জানালাম। যে সমস্ত আধিকারিকরা কমিশনের কাজে সহযোগিতা করছেন না তাঁদের বিরুদ্ধে কী ভাবে পদক্ষেপ করা যায় সেটা উনি আমাকে বললেন’।

সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করে অরুণবাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সব কিছুতে রাজনীতি দেখেন তাই আমাকে আক্রমণ করছেন। আমি রাজ্যপালকে বুঝিয়েছি রাজনীতি করার জন্য আমি কোনও পদক্ষেপ করি না। আমাকে ওনার পছন্দ না হতে পারে কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে নাম করে আক্রমণ করছেন। এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। মুখ্যমন্ত্রীর মনে রাখা উচিত, অহঙ্কারই মানুষের পতনের মূল’।

রাজ্যে তফশিলিদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে তিনি দরকারে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হবেন বলে জানান অরুণবাবু। তিনি বলেন, ‘তফশিলি কমিশনের দায়িত্ব সমাজের দুর্বলতম শ্রেণির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। এই রাজ্যে প্রতি মুহূর্তে তফশিলিরা খুন হচ্ছে। আর তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার। তফশিলিদের নিরাপত্ত দিতে দরকারে রাষ্ট্রপতির কাছে যাব’।