IPL 2023 KKR Vs PBKS Match Highlights: Kolkata Knight Riders Won The Match Against Punjab Kings By 5 Wickets


সন্দীপ সরকার, কলকাতা: পূর্বাভাস ছিল, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। বাংলায় সরাসরি প্রভাব নাও পড়তে পারে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে পুরোপুরি নিস্তার পাওয়া যাবে না।

যদিও সোমবার সকাল থেকে নীল আকাশ, প্রখর রোদ দেখে কোনও দুর্যোগের ইঙ্গিত টের পাওয়া যায়নি। বরং মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দাবদাহ গায়ে জ্বালা ধরাচ্ছিল।

তবে রাতের ইডেনে ঝড় উঠল। বিধ্বংসী সে ঝড়। তছনছ হয়ে গেল পাঞ্জাব কিংস শিবির। যে ঝড় তুললেন আন্দ্রে রাসেল। ২৩ বলে ৪২ রান। তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৮৩। ১৯তম ওভারে স্যাম কারানকে তিন ছক্কা মেরে রাসেলই কলকাতা নাইট রাইডার্স শিবিরে জয়ের স্বপ্ন সাজিয়ে দিলেন। যে স্বপ্ন পূর্ণতা পেল এমন একজনের ব্যাটে, এবারের আইপিএলে যাঁকে সেরা ছন্দে দেখা যাচ্ছে। রিঙ্কু সিংহ।

অর্শদীপ সিংহের শেষ বলে জেতার জন্য চাই ২ রান। বাউন্ডারি মেরে কেকেআরকে ২ পয়েন্ট এনে দিলেন রিঙ্কু। ১০ বলে ২১ রানে অপরাজিত রইলেন। পাঞ্জাব কিংসকে ৫ উইকেটে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল কেকেআর। নাইট শিবির এখনও বিশ্বাস করে যে, বৃষ্টি বিঘ্ন না ঘটালে মোহালিতে প্রথম সাক্ষাতে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে দিত তারা। শেষ পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে মাত্র ৭ রানে হারতে হয়েছিল কেকেআরকে। নিজেদের ডেরায় পাঞ্জাবকে হারিয়ে সঞ্জীবনী পেল কেকেআর। এক লাফে পয়েন্ট টেবিলে ৫ নম্বরে উঠে এলেন নাইটরা। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে। সেই সঙ্গে প্লে অফের দৌড়ে ভালমতোই রইলেন শাহরুখ খান-জুহ

ি চাওলার যোদ্ধারা (KKR vs PBKS)।

প্রথমে ব্যাট করে ১৭৯/৭ তুলেছিল পাঞ্জাব কিংস। হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন শিখর ধবন। অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটারই পাঞ্জাবের সর্বোচ্চ স্কোরার। ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কেকেআরের সেরা বোলার বরুণ চক্রবর্তী।

জবাবে ব্য়াট করতে নেমে কেকেআরের শুরুটা ভাল হয়েছিল। ১২ বলে ১৫ রান করে ফেরেন রহমনুল্লাহ গুরবাজ। ২৪ বলে ৩৮ রান করেন সুয়াশ শর্মার পরিবর্তে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা জেসন রয়। গোড়ালিতে চোট থাকায় তিন নম্বরে নামেননি বেঙ্কটেশ আইয়ার। পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ের সময় ২২ মিনিট মাঠে না থাকায় তাঁর পক্ষে তিন নম্বরে নামা সম্ভবও ছিল না নিয়মের জাঁতাকলে। তিনে নামের অধিনায়ক নীতীশ রানা। তবে শাপে বর হয়ে দেখা দেয় এই পদক্ষেপ। ৩৮ বলে ৫১ রান করেন নাইট নেতা।

তবু শেষ দিকে চাপ তৈরি হয়েছিল। মনে হয়েছিল, কেকেআর ম্যাচ হেরে যাবে না তো! শেষ ৪ ওভারে ৫১ রান দরকার ছিল নাইটদের। ভরসা বলতে, ক্রিজে ছিলেন আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিংহ। বিধ্বংসী ৪২ রান করলেন রাসেল। তিনিই ম্যাচের সেরা।

তবে শেষ হাসি ফুটল রিঙ্কুর ব্যাটে। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ রান। কেকেআরকে আর একটু হলে আটকে দিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার অর্শদীপ। তাঁর ওভারে পঞ্চম বলে যখন রাসেল রান আউট হলেন, শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২। ষোড়শ আইপিএলের প্রথম সুপার ওভার ইডেনেই হবে কি না, তা নিয়েও গ্যালারিতে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

রক্ষাকর্তা হয়ে ফের হাজির হলেন রিঙ্কু। অর্শদীপের শেষ বলে ফাইন লেগ দিয়ে চার মারলেন। জয় নিশ্চিত বুঝেই দৌড়ে গিয়ে লাফ মারলেন রিঙ্কু। মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে ধরলেন আকাশের দিকে। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যেন জেহাদের বার্তা। শত চাপেও মেরুদণ্ড সোজা রাখার অঙ্গীকার। হেরে যেতে যেতেও ফিরে আসার শপথ। সবই প্রতিফলিত হল তাঁর ছোটখাট চেহারায়।

ইডেনের জয়োধ্বনির মধ্যেই শেষ রাতে ওস্তাদের মার দেখিয়ে দিলেন রিঙ্কু।

আরও পড়ুন: আইপিএলে নারাইন ম্যাজিক কি শেষ? রহস্যভেদ করে ফেলেছেন ব্যাটাররা?