এক লাশের দাবিদার ২ পরিবার

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র এলাকা থেকে গত ১৩ এপ্রিল রাতে অর্ধগলিত একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটির দাবি করেছে দুই পরিবার। 

এর মধ্যে এক পরিবারের দাবি, লাশটি দাকোপ থানা এলাকায় নিখোঁজ জেলে হিলটন নাথের। আরেক পরিবারের দাবি, লাশটি মোংলা পৌর এলাকা থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ী মাহে আলমের। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ডিএনএ পরীক্ষার আদেশ দিয়েছেন খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ‌‘গ’।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৩ এপ্রিল করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র এলাকা থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৪ এপ্রিল দাকোপ থানা পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি হিলটন নাথের স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়। ৭ এপ্রিল সুন্দরবনে হিলটন নিখোঁজ হন দাবি করে দাকোপ থানায় হত্যা মামলা করেন মা বীথিকা নাথ।

অপরদিকে, ১০ এপ্রিল নিখোঁজ হন মোংলা পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মাহে আলম। করমজল এলাকা থেকে উদ্ধার লাশটি মাহে আলমের দাবি করে দাকোপ থানায় ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানান স্বজনরা। সেইসঙ্গে মাহে আলমের ছেলে সুমন রানা দাকোপ থানায় জিডি করেন। দুই পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ডিএনএ পরীক্ষার আদেশ দেন। 

সুমন রানার দাবি, মোংলার মামারঘাট এলাকা থেকে নিখোঁজ হন তার বাবা। সিসিটিভির ফুটেজে অপহরণের দৃশ্য আছে। এজন্য ওই লাশটি দাবি করেছেন। কিন্তু মোংলা থানায় মামলা করতে গেলে দাকোপ থানায় হিলটন নাথের মায়ের মামলার তথ্য জানিয়ে মামলা নেয়নি পুলিশ। দাকোপ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাহে আলম অপহৃত হয়েছে মোংলা থেকে। মামলা হলে হবে মোংলা থানায়। এ অবস্থায় স্বজনরা আদালতের শরণাপন্ন হন। এ ঘটনায় ২ মে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ মামলা নেওয়ার আবেদন জানান সুমন। আদালত মোংলা থানাকে মামলা নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।

সুমন রানা বলেন, ৭ মে আদালতের আদেশের কপি মোংলা থানায় পাঠানো হলেও এখনও মামলা নথিভুক্ত করেনি পুলিশ। তবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়েছে।

মোংলা থানার ওসি মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, ‘আদালতের আদেশের কপি এখনও থানায় আসেনি। আদেশের কপি হাতে পেলে মামলা নথিভুক্ত হবে।’

দাকোপ থানার পরিদর্শক শেখ শাহিনুর বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মঙ্গলবার ঢাকায় সিআইডি কার্যালয়ে বীথিকা নাথের এবং সুমন রানার নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেতে একটু সময় লাগবে। প্রতিবেদন আসার পর জানা যাবে, এটি কার লাশ। তখন দুই পরিবারের সন্দেহ দূর হবে।’