নৌকার মেয়র প্রার্থীর কর্মীদের মারধর, ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মী কারাগারে

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়কসহ ১৩ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এদিকে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৫ মে) বিকাল ৩টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা থেকে সরাসরি কারাগারে পাঠানো হয় আসামিদের। পরে ৪টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিচারক আল ফয়সাল তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতের পরিদর্শক শিশির কুমার পাল জানিয়েছেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছেন। আদালত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। 

কারাগারে পাঠানো ১৩ জন হলেন– মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ উদ্দিন মান্না, মান্নার ছোট ভাই নাদিম, পারভেজ হাওলাদার, শান্ত ইসলাম, মেহেদী হাসান, মিজানুর রহমান শাওন, মামুন হাওলাদার, আল আমিন হাওলাদার, রাসেদ হাওলাদার, নান্টু সন্যামত, ইমরান হোসেন সজীব, ফাহিম ও সুমন হাওলাদার। তারা সবাই মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রবিবার রাতে মহাশ্মশান এলাকায় মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের চার কর্মীকে মান্নার নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় রাতেই ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনা আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় মান্নাসহ ১০ জনকে পুলিশ এবং তিন জনকে র‌্যাব নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেফতার প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য হয়নি।’

অপরদিকে, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর দাবি করেন, ‘ঘটনাস্থলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে মান্না ছিলেন না। এ ঘটনা সম্পর্কিত কোনও ভিডিও ফুটেজও কেউ উপস্থাপন করতে পারেনি। মহানগর আওয়ামী লীগ গত রাতের ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছে।’ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে দ্রুত দলীয় কার্যালয় ত্যাগ করেন নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনার আগে মান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর ‍দুই কর্মী এবং শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং একজন ছাত্রকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এ সময় ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল প্রদর্শন করেন মান্না। ওই দুই ঘটনায় নগরীর দুটি থানায় মান্না এবং তার ভাইসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।