অঙ্গনওয়াড়ির চাকরি নিয়ে রাজ্যকে চাপ কেন্দ্রের, নয়া নিয়মে কি কোপ পড়বে?

বাংলায় দেখা গিয়েছে নানা পদে চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। তার জেরে বেড়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। সেখানে এবার বিপরীত পথে হাঁটল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আর কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া নিয়মে কোপ পড়তে চলেছে বাংলার প্রান্তিক মানুষের উপর। এমনকী এই নয়া নিয়ম মানতে রাজ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করছে কেন্দ্র বলে অভিযোগ। এদিকে বাংলার গ্রামীণ মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা পায়নি। আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখায় মাথার উপর ছাদ হয়নি। এবার অঙ্গনওয়াড়িতে কোপ।

কেমন করে কোপ পড়তে পারে?‌ এবার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি পাওয়ার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৪৫ থেকে কমিয়ে ৩৫ বছর করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর সেই নিয়ম বাংলায় কার্যকর করতে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে নয়াদিল্লি। এই নয়া নিয়ম মানলে কোপ পড়বে কর্মসংস্থানে। যদিও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কাজ করে রোজগার করছিলেন বাংলার মানুষজন এবার তাতেও কোপ দিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে গ্রামীণ মানুষের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলায় নতুন করে জটিলতা তৈরির ছক বলে অনেকে মনে করছেন।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রের এই নিয়ম কার্যকর করা হয়নি বাংলার মানুষের স্বার্থে। এখন কেন্দ্রের এই নিয়ম না মানলে অঙ্গনওয়াড়ি খাতেও বাংলার বরাদ্দ আটকে দেওয়া হতে পারে। কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতেই তেমনই প্রচ্ছন্ন হুমকি রয়েছে। তাই নারী–শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ দফতর এই আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে ফাইল পাঠিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে। কেন্দ্রের এই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিতে পারেন। এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে প্রান্তিক মানুষ বঞ্চিত হবেন। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন।’

বাংলায় অঙ্গনওয়াড়ির অবস্থা কী?‌ বাংলায় এখন ১ লক্ষ ১৮ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি বা আইসিডিএস কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে ছয়–সাতটি জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং হেল্পার পদে কয়েক হাজার নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৪৫ বছর ধরা হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেবেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতায়ও বদল আনা হয়েছে। আগে অষ্টম শ্রেণি পাশ হলেই হেল্পারের চাকরির জন্য আবেদন করা যেত। এঁদের কাজ রান্না করা, খাবার পরিবেশন এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিচ্ছন্ন রাখা। শিক্ষা ও পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখেন ওয়ার্কাররা। আগে মাধ্যমিক পাশ হলেই চলত। কেন্দ্রের নয়া নিয়মে দুটি ক্ষেত্রেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।