মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা, ৫ মাস পরে উদ্ধার হলো লাশ

অপহরণের পর একাধিকবার ফোন করেও ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দেওয়ায় আমির হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয় অপহরণকারীরা। এ ঘটনার পাঁচ মাস পর পুলিশ গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে।

বুধবার (১৭ মে) বিকালে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড (দারোগাচালা) এলাকার রহিম মোল্লার বাড়ির পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণখান থানা পুলিশ। নিহত আমির নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় তুলাচারা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।

অপহরণ মামলায় গ্রেফতার তারেক আহমেদ (৩২) নাটোর জেলা সদর উপজেলা রুয়েরবাগ গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। বুধবার (১৭ মে) সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তাজুল ইসলাম জামে মসজিদ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ শ্রীপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমির হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন জানান, তার ভাই আমির হোসেন গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর আশকোনা এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের কয়েক মাস হয়ে গেলেও সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তিনি ভাইয়ের সন্ধান পাননি। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল তিনি নিজে বাদি হয়ে দক্ষিণ খান থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

দক্ষিণ খান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজিয়া খাতুন বলেন, নিহতের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন ছোট ভাই আমির হোসেনকে অপহরণের ঘটনায় দক্ষিণ খান থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারী তারেক আহমেদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বুধবার (১৭ মে) সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তাজুল ইসলাম জামে মসজিদ থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে পুলিশ তাকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড (দারোগাচালা) এলাকার স্থানীয় রহিম মোল্লার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় আমির হোসেনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।

তিনি আরও জানান, অপহরণকারী তারেক আহমেদ পোশাক শ্রমিক পরিচয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড (দারোগাচালা) এলাকার মনির হোসেনের বাড়িতে ভাড়ায় ওঠে। সে ছিনতাইকারী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ও সমকামী। তার ফেসবুকের মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আমির হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাকে শ্রীপুরের তার ভাড়া বাসায় আসতে বলে আমির হোসেনকে। তার কথায় বিশ্বাস করে সে ২৫ ডিসেম্বর অপহরণকারীর বাসায় আসে। পরে তাকে আটক করে তার ভাইয়ের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

রহিম মোল্লার বাড়িতে স্থানীদের ভিড়

মুক্তিপণের টাকা না দেওয়ায় আমির হোসেনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে রাখে। পরে তার পরিবার থেকে অপহরণকারীর সঙ্গে যোগাযোগ না করায় তিনদিন পর ২৮ ডিসেম্বর মাওনা বাজার থেকে বস্তা ও রশি কিনে আমির হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের বাড়ির রহিম মোল্লার পরিত্যাক্ত সেপটিক ট্যাংকে লাশ বস্তায় ভরে ফেলে রাখে। হত্যার পর চার দিন পর অপহরণকারী সেখান থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ায় চলে যায়।