একশো দিনের টাকা বকেয়া রেখেছে কেন্দ্র, কলকাতা হাইকোর্টে এবার মামলা দায়ের

বাংলাকে ভাতে মারতে চাইছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এমনই অভিযোগ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কারণ এক কোটির বেশি জব কার্ড হোল্ডার আছে। তাছাড়া বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম একশো দিনের কাজ। কিন্তু ১০০ দিনের কাজ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে দুয়োরানি সুলভ আচরণ করছে মোদী সরকার। অথচ সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বহুবার নানা নথি দেওয়া থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার চিঠি লিখলেও একটি টাকা ঠেকায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তাই এই ব্যাপারে আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে।

এদিকে দু’বছর হতে চলল একশো দিনের কাজের মজুরি বাবদ টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। তার জেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন জবকার্ড হোল্ডাররা। সদ্য এগরায় অবৈধ বাজি কারখানায় কাজ করতে গিয়ে বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে মানুষজনের। এই মানুষজনের মধ্যে অনেকেই একশো দিনের কাজ করে টাকা পাননি বলে অভিযোগ। তাই এই বিকল্প পথে রোজগার করতে গিয়েছিলেন। আর প্রাণ হারিয়েছেন। এই ব্যাপারে আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে।

অন্যদিকে একশো দিনের কাজে পরপর দু’টি অর্থবর্ষে বাংলাকে কোনও টাকা দেয়নি কেন্দ্র। ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা প্রকল্প মিলিয়ে এখন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের পাওনা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা ছাড়ার বিষয়ে কোনও শব্দ খরচ করছে না মোদী সরকার। বাংলার জন্য বরাদ্দ ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় তহবিল আটকে রেখেছে মোদী সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পর ‘১০০ দিনের কাজ’ প্রকল্পে কোনও টাকা আসেনি বাংলায়। এই খাতে বকেয়া প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। আবাস যোজনার ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ির জন্য কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মোট প্রাপ্য ৮ হাজার ১৮২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা।

আর কী ঘটেছে দাবি নিয়ে?‌ একশো দিনের কাজে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ হওয়া নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‌একশো দিনের কাজের টাকা না পেলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে গিয়ে অনশন করুন। আমিও তাঁর সঙ্গে সামিল হবো। উনি সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারেন। তা না করে নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে একমাত্র কংগ্রেসই কথা বলে।’‌ অধীরের মন্তব্য নিয়ে পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‌এটা তো গোটা বাংলার সমস্যা। ওঁরা কেন এটা নিয়ে মুভ করছেন না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন কীভাবে কী করতে হবে। অধীর চৌধুরীরা এখন বিজেপির দুই ভাইয়ের একজন।’‌