চাদরে ঢাকা মায়ের লাশের পাশেই শুয়ে অচৈতন্য ছেলে, হাড়হিম করা ঘটনা দুর্গাপুরে

বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। অথচ বাড়ির দরজা–জানালা বন্ধ। উৎকট এই গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়েন প্রতিবেশীরা। কিন্তু কে জানত এমন হাড়হিম ঘটনা দেখতে হবে। তাই কিছু বুঝে ওঠার আগেই গন্ধের উৎস খুঁজতে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। আর যখন সেই বাড়ির দরজায় গিয়ে দাঁড়ালেন দেখলেন বীভৎস দৃশ্য। মায়ের মৃতদেহ চাদর দিয়ে ঢাকা। আর পাশেই অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে রয়েছে ছেলে। এই বীভৎস হাড়হিম করা ঘটনা দেখে চমকে ওঠেন এলাকাবাসী। তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে অচৈতন্য ছেলের জ্ঞান ফিরিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। আর মায়ের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই হাড়হিম করা ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এই হাড়হিম করা ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর থানা এলাকায়। এখানের এজোন ট্রাঙ্ক রোডের একটি আবাসনে তাঁরা থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাতে ওই বন্ধ বাড়ির ভিতর থেকে দুর্গন্ধ আসতে থাকে। যা এলাকাবাসীর নাকে খুব খারাপ লাগে। পরিস্থিতি সময়ের সঙ্গে পাল্টাচ্ছে না দেখে প্রতিবেশীরা গন্ধের উৎস সন্ধানে নামেন। আর সেই বাড়ির দোরগোড়ায় যেতেই বীভৎস ঘটনা চোখের সামনে আসে। তবে পুলিশ এসে বাড়ির সামনের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। তখন দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে মায়ের দেহ চাদরে ঢাকা। আর পাশে অচৈতন্য ছেলে শুয়ে।

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, এই ছেলের নাম রজত চক্রবর্তী। তাঁর শরীর গরম দেখে জল দিয়ে তার জ্ঞান ফেরানো হয়। আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাড়ির ভিতর ফ্যানের সঙ্গে একটি কাপড় লাগানো ছিল। সেটা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গোটা বিষয়টিই খুব সন্দেহজনক। ছেলে রজত চক্রবর্তী শেয়ারের ব্যবসা করেন। আর মা অনন্যা চক্রবর্তীর সঙ্গে বাড়ি বিক্রি করা নিয়ে সম্প্রতি ঝামেলা চলছিল। সেখান থেকে খুন কিনা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই সেটা বোঝা যাবে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই পরিবারের সঙ্গে যুক্ত এক আত্মীয় পুলিশকে জানান, সম্প্রতি আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল রজত চক্রবর্তী। বাজারে বেশ দেনাও হয়ে গিয়েছে। বাড়িটা বিক্রি করে সেই দেনা শোধ করার কথা জানায় মাকে। কিন্তু মা অনন্যা চক্রবর্তী স্বামীর ভিটে বিক্রি করতে রাজি ছিলেন না। ছেলে রজত জানিয়েছিল, বাড়ি বিক্রি করে সেটা টাকা দিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনবেন। তাতেও রাজি ছিলেন না মা অনন্যা। তখন থেকেই অশান্তি শুরু হয়। তাহলে এটা আত্মহত্যা না খুন? মৃত অনন্যা চক্রবর্তীর (‌৬২)‌ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ছেলে সুস্থ হয়ে উঠলে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ বলে সূত্রের খবর।