ওলামা লীগকে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে তাদের সহযোগী সংগঠন করা হবে নাকি সমমনা সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে সেটা ঠিক করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই তথ্য জানিয়েছেন। শনিবার (২০ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী ওলামা লীগের প্রথম সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের নানা দিকনির্দেশনা দেন তিনি। 

বক্তব্য দেওয়ার সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী ওলামা লীগের একটি ইচ্ছে ছিল যে সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। তার জন্য সময় লেগেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ তা সম্ভব হয়েছে। আমি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি যাতে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা স্থান পাবেন।

তিনি বলেন, কমিটিতে যেন বাস্তবতার ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকে। নেতাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলায় আসতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথে ওলামা লীগের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঝে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতা দেখা গিয়েছিল। তবে সেসব কাটিয়ে উঠে যেন একটি যোগ্য কমিটি তৈরি হয়। দলাদলি করে বদনাম কামাবেন না। এসব করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নব্বইয়ের দশকে ওলামা লীগের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালের পর থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা বাড়তে দেখা যায়। এরমধ্যেই অনেক ভাগে বিভক্ত হয়ে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডেও জড়ানোর অভিযোগ ওঠে এর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ওলামা লীগ নামে কোনও সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় আওয়ামী লীগ। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দিলো ক্ষমতাসীন দলটি।

ওলামা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান। দুই নেতাই তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওলামা লীগের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু এখন থেকে একে আমরা একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সংগঠনটি নেতাকর্মীদের দলাদলি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করারও নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ওলামা লীগ দীর্ঘদিন রাজপথের আন্দোলনে ছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুলিশের আক্রমণের মুখেও রাজপথ ছাড়েননি এবং নেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশ তারা অমান্য করেননি। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল, তারা সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। সময় লেগেছে, তবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সম্মেলন হচ্ছে।

ওলামা লীগের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতি প্রতিফলিত হবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগরে দুটিসহ সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠনটির কমিটি গঠনের কথা বলেন কাদের।  

ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, দলদলি করবেন না। বদনাম কামাবেন না। ওলামা লীগের নামে চাঁদাবাজি করবেন না। বদনাম যেন না হয়। প্রোগ্রাম করবেন, পয়সা না থাকলে আমাকে বলবেন। নেত্রীকে আমি বলবো। আপনাদের খরচ যেটা প্রয়োজনীয় সেটা নেত্রীই বহন করবেন। কিন্তু আপনারা চাঁদাবাজি করে দুর্নাম কামাবেন না। এটা অতীতের অনেকেই করেছে। আপনার খুব ভালো করেই জানেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। আপনারা লাকি। এতোদিন ওলামা লীগ বিভিন্ন ধারায় চলেছে। বিতর্কিতভাবে চলেছে। আওয়ামী লীগ এক কথা বলেছে, পেছন থেকে অন্য কথা বলেছেন। বিরোধী কথাবার্তা বলা যাবে না। শেখ হাসিনার সরকার যে কথা বলবে তার সঙ্গে মিলিয়ে আপনাদের কথা বলতে হবে। বিরোধ করা যাবে না।

আরও পড়ুন- 

অবশেষে ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিচ্ছে আ.লীগ