মেয়েদের চাকরি দেবেন না কেন? সরাসরি JRD টাটাকে চিঠি দিয়েছিলেন সুধা মূর্তি

দ্য কপিল শর্মা শো-এর এক সাম্প্রতিক পর্বে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তা এবং ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন সুধা মূর্তি। অনুষ্ঠানে নিজের জীবনের নানা অজানা উপাখ্যান শেয়ার করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোয়ের বিভিন্ন ক্লিপিংস বেশ ভাইরাল হয়েছে। এই একই পর্বে চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং অস্কার বিজয়ী গুনীত মঙ্গা এবং অভিনেতী-পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত রবীনা ট্যান্ডনও হাজির ছিলেন। আরও পড়ুন: Sudha Murthy: বিতর্ক এড়াবেন কীভাবে? স্বামী নারায়ণ মূর্তি, জামাই ঋষিকে পরামর্শ পদ্মভূষণ সুধার

এই পর্বেই সুধা মূর্তি তাঁর পড়ুয়া বয়সের একটি কাহিনী শেয়ার করেন। তিনি জানান, তাঁর ইনস্টিটিউটে একটি চাকরির সুযোগের সম্পর্কে নোটিশ এসেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ‘মহিলা পড়ুয়াদের আবেদন করার প্রয়োজন নেই।’ এর প্রেক্ষিতে তিনি জেআরডি টাটাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। কী চিঠি?

‘১৯৭৪ সালে আমি টাটা ইনস্টিটিউট, ব্যাঙ্গালোরে এমটেক (মাস্টার অফ টেকনোলজি) করছিলাম। ক্লাসে সব ছেলে। আমিই একমাত্র মেয়ে ছিলাম। এর আগে B.E করেছি(ব্যাচেলর অফ ইঞ্জিনিয়ারিং)। আমি তখন আমেরিকায় পিএইচডি করার জন্যও স্কলারশিপ পেয়েছিলাম। একদিন আমি হোস্টেলে ফিরছিলাম। সেই সময়ে নোটিশ বোর্ডে দেখলাম, TELCO, পুনেতে তরুণ, উজ্জ্বল ইঞ্জিনিয়ারদের ভাল বেতনের চাকরির জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কিন্তু শেষে উল্লেখ করা, ছাত্রীদের আবেদন করার দরকার নেই। মনে হল যেন, সিগারেটের প্যাকেটে ছোট ছোট হরফে লেখা ‘সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। এটা দেখে সত্যিই আমার খুব রাগ হয়েছিল। আমার তখন তেইশ বছর বয়স। সেই বয়সে রাগও বেশি বেশি হয়।

‘এটা দেখেই আমি হোস্টেলে ফিরে গেলাম। একটা পোস্টকার্ড নিলাম। সরাসরি জেআরডি টাটা স্যারকে চিঠি লিখলাম। প্রতি বছর ১৫ই মার্চ টাটার জন্মদিন উদযাপন করতে তিনি আমাদের প্রতিষ্ঠানে আসতেন। অনেক দূর থেকে তাঁকে দেখতাম। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন ছাত্রী ছিলাম। এত বড় মানুষের কাছে গিয়ে দেখা করার সাহস আমার ছিল না। তিনি খুব সুদর্শন ছিলেন। ঠিক যেন এক গ্রিক দেবতার মতো দেখতে ছিলেন,’ বলেন ৭২ বছর বয়সী সুধা মূর্তি।

তিনি বলেন, ‘চিঠিতে আমি লিখেছিলাম, জেআরডি টাটা স্যার, যেই সময়ে দেশ স্বাধীন হয়নি, সেই তখন থেকেই আপনার সংস্থা রাসায়নিক, লোকোমোটিভ, লোহা এবং ইস্পাত শিল্প নিয়ে এগোতে শুরু করেছিল। আপনি সর্বদাই সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকেন। আমাদের সমাজে ৫০-৫০% নারী-পুরুষ আছেন। নারীদের সুযোগ না দেওয়ার অর্থ হল, দেশের উন্নতি হবে না। মহিলারা যদি শিক্ষা এবং চাকরির সুযোগ না পান, তাহলে একটি সমাজ বা একটি দেশ কখনই উন্নত হবে না। এটি আপনার কোম্পানির একটি ভুল সিদ্ধান্ত।’

তিনি জানান, তাঁর এই চিঠির পরপরই টেলকোর নোটিশ বদলে ফেলা হয়। মহিলাদের জন্যও আবেদনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। আরও পড়ুন: Sudha Murthy: ‘আমার মেয়ে তাঁর স্বামীকে প্রধানমন্ত্রী করেছেন’, বক্তব্য ঋষি সুনাকের শাশুড়ি সুধা মূর্তির

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup