Mamata on ₹2000 note Scrap: ‘ধামাকা নয়, ধোকা’, ২০০০ টকার নোটের ‘ব্যাঙ্ক ওয়াপসি’ নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর, ঠিক রাত ৮টার সময় নোটবাতিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কয়েক মিনিটেই গোটা দেশে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। বাতিল করা হয়েছিল সেই সময়ের ১০০০ এবং ৫০০ টাকার নোট। বলা হয়েছিল, ভুয়ো টাকা এবং কালো টাকার রমরমা ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ। পরবর্তীতে নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোট আনা হয়েছিল। গতকাল রাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া একটি নির্দেশিকা জারি করে নতুন ২০০০ টাকার নোট ফেরানোর ঘোষণা করে। তবে ২০১৬ সালের মতো এবার তাড়াহুড়ো লাগবে না। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় মিলবে ২০০০ টাকার নোট বদলে নেওয়ার বা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়ার জন্য। তবে এরই মাঝে কেন্দ্রকে এই ‘মিনি নোটবন্দি’ নিয়ে তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পদক্ষেপকে ‘প্রতারণা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

গতরাতে একটি টুইট বার্তায় ২০০০ টাকা ফেরানো ইস্যুতে মমতা লেখেন, ‘তাহলে এটা ২০০০ টাকার নোটের ধামাকা ছিল না, বরং ১০০ কোটি ভারতীয়কে দেওয়া বিলিয়ন ডলার ধোকা ছিল। আমার ভাই ও বোনেরা, ঘুম থেকে উঠুন। নোট বাতিলের সময় আমাদে যে কষ্ট পোহাতে হয়েছিল, তা এখনও আমরা ভুলে যাইনি। আর যারা আমাদের সেই কষ্ট দিয়েছে, তাদের ক্ষমা করা উচিত নয়।’ এর আগে এই ইস্যুতে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। এক টুইট বার্তায় কুণাল লেখেন, ‘গতবার নোটবন্দিতে বলা হয়েছিল কালো টাকা উদ্ধার হবে, জঙ্গিদের টাকার জোগান বন্ধ হবে, কিন্তু কোনোটাই হয়নি। কিছু লোক ব্যাঙ্কলুট করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। আর ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকার আবারও সাধারণ মানুষকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে।’

উল্লেখ্য, গতকালই বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার ঘোষণা করে আরবিআই। দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের মতে, এই পদক্ষেপে দেশের মাত্র ১১ শতাংশ অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে। তবে এখনই অবৈধ ঘোষণা করা হচ্ছে না ২০০০ টাকার নোটকে। আপাতত এই নোটগুলি বৈধতা থাকবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ২৩ মে থেকে শুরু করে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই নোট বদল করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। প্রায় ৭ বছর আগে ছাপানো শুরু হয়েছিল ২০০০ টাকার নোট। তবে এই নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা আগের থেকেই ছিল আরবিআই-এর। এর জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকেই ২০০০ টাকার নোট ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেকবার গুজবও রটেছে যে ২০০০ টাকার নোট বাতিল করা হয়েছে। তবে এবার আরবিআই এই ২০০০ টাকার নোটের ‘ব্যাঙ্ক ওয়াপসি’র ঘোষণা করল। তবে আগেরবারের মতো এই ‘নোটবন্দি’ আচমকা হচ্ছে না। তাই সাধারণ মানুষের তত কষ্ট হবে না বলেই আশা। তাছাড়া সাধারণ মানুষের হাতে এখন সেই অর্থে তত সংখ্যক ২০০০ টাকার নোট নেই। এমনি বাজারে ২০০০ টাকার নোট প্রায় দেখাই যায় না আর। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত টাকার মধ্যে মাত্র ১০.৮ শতাংশ মূল্যের নোট হল ২০০০ টকার। লেনদেনের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকার নোটের চাহিদা কম। এটি বন্ধ হলে লেনদেনে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তবে আরবিআই-এর এই পদক্ষেপকে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দার জন্য হাতিয়ার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।