সকাল থেকেই বজবজের গ্রামে রাস্তা অবরোধ, বিস্ফোরণে পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ

বাজির আঁতুড়ঘর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ। দীপাবলির আগে এবং অন্যান্য পার্বণে এখানেই মানুষ দূর–দূরান্ত থেকে আসে বাজি কিনতে। মহেশতলা, নুঙ্গি, বজবজ বাজি তৈরি এবং বিক্রির জন্যই বিখ্যাত। আর এই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রামে। রবিবার সন্ধ্যায় একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। তারপরই পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়েছে গ্রামে। পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর বাজি ও বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে। এমনকী এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। তাই আজ, সোমবার সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ করলেন গ্রামের মহিলারা। আর তাতেই নতুন করে সমস্যা দেখা দিল।

কেন এমন অবরোধ করা হল?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, এখানে বেশিরভাগ মানুষের রুটি–রুজি বাজি তৈরি ও বিক্রি করা। কিন্তু এখন বিস্ফোরণের ঘটনার পর পুরুষরা গ্রাম ছাড়া হয়েছেন। গ্রামের মহিলাদের বক্তব্য, এই গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই বাজি তৈরি করা হয়। অনেকেরই লাইসেন্স নেই। পুলিশ সব জানে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরণের খবর দেখানোর পরই পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। ব্যাপক ধরপাকড় করতে থাকে। তাতে গ্রামের পুরুষরা গ্রামছাড়া। আর অসহায় হয়ে পড়েছেন মহিলারা। তাই আজ, সোমবার সকাল থেকেই গ্রামে ঢোকার রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের পর থেকে থমথমে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রাম। ডায়মন্ডহারবার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাজি বাজেয়াপ্ত করার অভিযান চলছে। তুবড়ি, চকলেট, চরকা, রকেট, সেল, তারাবাতি, রংমশাল–সহ প্রচুর মশলা উদ্ধার হয়েছে। আর ২০ জনকে আটকও করা হয়েছে। এই বিস্ফোরণের তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বেআইনি বাজি তৈরির কারখানাও খোঁজ করা হচ্ছে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ বজবজের চিংড়িপোতা নন্দরামপুর গ্রামে ঢোকার রাস্তা সকাল থেকেই অবরোধ করে রেখেছেন এলাকার মানুষজন। তাঁদের দাবি, বাজি তৈরিই এখানে মানুষের জীবন–জীবিকা। সেখানে বিস্ফোরণের পর থেকেই রাতভর অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। নিরাপরাধ গ্রামবাসীদেরও পুলিশের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। গোটা গ্রামে তল্লাশি চলছে। প্রচুর পরিমাণে বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকার পুরুষরা এখন বাড়ি ছাড়া। সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে পুলিশের এই অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদস্বরূপ রাস্তা অবরোধ।