বাজেয়াপ্ত সোনা চুরি শুল্ক দফতর থেকে, কেমন করে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত?‌

শুল্ক দফতরের বাজেয়াপ্ত করা সোনা দফতরের ভিতর থেকে চুরি হয়ে গেল। এমন ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় গোটা অফিস। কারণ এক কেজি সোনা বাজেয়াপ্ত করে রাখা ছিল। সেটাই চুরি হয়ে যায়। তদন্তে নেমে শুল্ক দফতরের অফিসাররা জানতে পারেন, সরষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। আর তারপরই এই চুরির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত। প্রথমে দফতরের দুই অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। আর তারপর তাদের জেরা করে গ্রেফতার করা হয় মূলচক্রীকে।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, এক কেজি সোনা পাচার হওয়ার আগে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেটা দফতরেই রাখা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায় সেই বিপুল পরিমাণ সোনা গায়েব। চুরি হয়েছে বুঝতে পেরেই তদন্তে নামেন অফিসাররা। আর তারপর সোমবার মাঝরাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলির বক্সীগঞ্জ এলাকার বাসভবন থেকে পার্থ সাহা নামে এক সোনা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে হিলি থানার পুলিশ ৷ ধৃতকে মঙ্গলবার দুপুরে বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এই ঘটনায় আর কারা জড়িত রয়েছে?‌ সেটা খতিয়ে দেখছে হিলি থানার পুলিশ ৷ গ্রেফতার হওয়া ব্যবসায়ীকে জেরা করার জন্য হিলি থানায় যাওয়ার কথা জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে’র।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে হিলি স্থলবন্দরের শুল্কদফতরের অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা সাতটি সোনার বাট চুরি হয়ে যায়। যার ওজন প্রায় ১ কেজি। এই ঘটনায় শুল্ক দফতরের ইন্সপেক্টর বলাদিত্য বারিক হিলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এপ্রিল মাসে শুল্ক দফতরের অস্থায়ী দুই কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তাদের জেরা করতেই মূল অভিযুক্তের নাম বেরিয়ে আসে। তারপর মাঝরাতে গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের উপর ভিত্তি করে বক্সীগঞ্জ এলাকায় তল্লাশি চালায় এবং সোনা ব্যবসায়ী পার্থ সাহাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, শুল্ক দফতরের অস্থায়ী দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেই পার্থ সাহার নাম হাতে আসে। এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাদের পাচারের যোগ ছিল দীর্ঘদিনের। তবে আগে কোনও পাচার করার ঘটনা আছে কিনা সেটা এখনও জানা যায়নি। তবে কয়েকটি ঘটনায় পার্থ সাহার নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু অকাট্য প্রমাণের অভাবে এই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে শুল্কদফতর থেকে সোনা চুরির ঘটনায় তদন্তে নেমে সোনার অবৈধ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটি টাকা সোনা পাচারে আঁতাত ছিল তাদের মধ্যে। সেই প্রমাণ হাতে এসেছে শুল্ক দফতরের অফিসারদের হাতে।