আগ্নেয়াস্ত্র কারখানার পর্দাফাঁস করল এসটিএফ, বিপুল অস্ত্র–সহ গ্রেফতার পাঁচ

বিহারের মুঙ্গের থেকে বাংলায় আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে। এই তত্ত্ব আগেই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেটাই যেন অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল। বিহারের বৈশালীতে ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক ফিল্ডের আড়ালে চলা বেআইনি অস্ত্র কারখানার পর্দাফাঁস করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। আর তাতেই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় সিলমোহর পড়ল। বুধবার স্থানীয় থানার পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে এসটিএফ যৌথ অভিযানে নামে। তখন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কাজ চলছিল। ব্যস, গ্রেফতার করা হয় এই কারখানার মালিক–সহ পাঁচজনকে। তার জেরেই মুঙ্গের গ্যাংয়ের বেআইনি পিস্তলের কারবারের পর্দাফাঁস হয়ে গেল।

এদিকে গোপন সূত্রে কলকাতা পুলিশের স্পেশাস টাস্ক ফোর্সের কাছে এমন খবর এসে পৌঁছেছিল। সেই খবরের প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় বিহারের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের। তারপরই পরিকল্পনা করে কলকাতা পুলিশ ও বিহার পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স যৌথ অভিযানে নামে বিহারের বৈশালীতে। তবে এই অভিযানে ছিলেন বৈশালী জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারাও। বিহারের বৈশালী জেলার কার্তাহন থানা এলাকায় লালা নাথ বাবা চক এলাকায় ইটভাটায় যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

ঠিক কী উদ্ধার হয়েছে?‌ অন্যদিকে এসটিএফ সূত্রে খবর, উদ্ধার করা হয়েছে লেদ ও মিলিং মেশিন, ড্রিলিং এবং গ্রাইন্ডিং মেশিন, কিছু তৈরি হওয়া পিস্তল ও অর্ধেক তৈরি পিস্তল। ধৃত পাঁচজন ও উদ্ধার হওয়া সামগ্রী বিহার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার স্থানীয় থানা তাদের বিহারের আদালতে তুলবে। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এসটিএফের হাতে কয়েকজন অস্ত্র ব্যবসায়ী ধরা পড়ে। তাদের জেরা করেই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির এই কারখানার তথ্য জানতে পারেন অফিসাররা। তার ভিত্তিতেই এদিনের তল্লাশি।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এখানে ইটভাটার মোড়কে বেআইনি অস্ত্রের রমরমা কারবার চালানো হচ্ছিল। যে খবর জানতে পারে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। তারপর যৌথ অভিযানে ১০টি অর্ধেক তৈরি করা ৭এমএম পিস্তল, ১০টি করে পিস্তলের স্লাইড, পিস্তলের বডি, গ্রিপ এবং পিস্তলের ব্যারেলও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির আরও অন্যান্য সামগ্রীও মিলেছে ইটভাটা থেকে। ইটভাটার মালিক–সহ যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম রঞ্জন কুমার, গুলশন কুমার সিং, মহম্মদ কামালউদ্দিন, মহম্মদ মুন্না এবং মহম্মদ পারভেজ ওরফে ক্রান্তি। ইটভাটার মালিক রঞ্জন কুমারের বাড়ি মুঙ্গেরের গঙ্গাপুলে।