জামাইষষ্ঠীর বাজারে আম–ইলিশের দামে ছ্যাঁকা, জামাইয়ের পাত সাজাতে নাভিশ্বাস

সাড়ে ৭০০ গ্রাম থেকে শুরু হয়ে পৌনে দু’কেজি ওজনের ইলিশের দেখা মিলছে জামাইষষ্ঠীর বাজারে। সাইজ অনুযায়ী দর হাঁকতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা। আশি টন ইলিশ রাজ্যে আসায় চাহিদার অনেকটাই পূরণ হচ্ছে। জামাইয়ের পাতে ইলিশ তুলে দিতে বাজারে হাজির শ্বশুরমশাইরা। কিন্তু জামাইয়ের পাত সাজানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে গিয়ে ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে শ্বশুরমশাইদের। কারণ সবজি থেকে মাছ, ফলের দাম আগুন। আর তাতেই নাভিশ্বাস উঠেছে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের।

আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে জামাইষষ্ঠীর অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। তার উপর জামাই যদি সরকারি কর্মচারী হন তাহলে তো অর্ধদিবস ছুটি উপহার পেয়েছেন। ফলে দুপুরেই হাজির হবেন জামাই–বাবাজীবন। তাঁকে তো পাত পেড়ে খাওয়াতে হবে। কিন্তু বাজারে গিয়ে মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে বহু শ্বশুরমশাইয়ের। জামাইয়ের পাতে বাজারের সেরা মন্ডা–মিঠাই থেকে আম–ইলিশ দেওয়ার দিন আজ। সেখানে এক কেজির নীচে ইলিশের দাম ১২০০ টাকা। ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মিলছে ১৫০০ টাকায়। ইলিশের ওজন দেড় কেজির ওপরে হলে দাম পড়ছে ১৮০০ থেকে দু’‌হাজার টাকা। তাতেই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে।

এদিকে ভাজা, ভাপা কিংবা পাতুরি। খাদ্য রসিকদের পাতে ইলিশের টুকরো হলেই হল। ভাতের থালার পাশে কচি পাঁঠার ঝোল, চিংড়ির মালাইকারি যতই থাকুক, জামাইষষ্ঠীতে ইলিশের বাটি না সাজাতে পারলে শাশুড়ির মনে শান্তি হয় না। জামাইদের রসনাতৃপ্তিতে কলকাতার বাজারে নামল প্রায় ৮০ টন ইলিশ। মায়ানমার–বাংলাদেশের ইলিশও রাজ্যে এসেছে। পয়লা বৈশাখ, জামাইষষ্ঠী, বিজয়া দশমী, সরস্বতী পুজোর দিনে ইলিশের চাহিদা সাধারণত তুঙ্গে থাকে। তাই বাজারে এখন ফল এবং ইলিশে হাত দিলেই ছ্যাঁকা লাগছে। অন্য মাছের মধ্যে গলদা চিংড়ি মিলছে ৭০০–৮০০ টাকায়। বাগদা হলে দাম পড়ছে ১২০০–১৫০০ টাকা।

অন্যদিকে আজ জামাইষষ্ঠী। তাই মঙ্গলবার থেকে পাইকারি বাজারে ঢুকছে হিমঘরের ইলিশ। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে বহু মানুষ ইলিশ কিনতে এসেছেন জামাইষষ্ঠীর জন্য। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও পকেটের রেস্তো সমর্থন করছে না। এক কেজির মধ্যে থাকা ওজনের ইলিশের দামই চড়া। দেড় কিলো কিংবা পৌনে দু’কিলো মাপের ইলিশের দাম আগুন। রাজ্যের ফিস ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (হিলসা) সভাপতি অতুলচন্দ্র দাস বলেন, ‘জামাইষষ্ঠীতে প্রত্যেক বছরই ইলিশের চাহিদা থাকে। হিমঘরের ইলিশ বের করা হয়েছে। জামাইষষ্ঠীর জন্য প্রায় ৮০ টন ইলিশ বাজারে এসেছে। তার ৮০ শতাংশ মায়ানমারের। বাকিটা বাংলাদেশ ও বাংলার ইলিশ।’‌ ভেটকির দাম ৬০০–৬৫০ টাকা। ৬৫০ টাকা দামে পাওয়া যাচ্ছে পারশে বা পাবদা মাছ। আর ফলের দামও আকাশছোঁয়া। হিমসাগর বিকোচ্ছে ৮০–১২০ টাকায়। লিচু এক কেজি ২০০ টাকা। আর তাতেই চাপে পড়েছেন শ্বশুর–শাশুড়িরা।