ISRO Chief of Science in Vedas: বিজ্ঞানের উৎস বেদে, তবে এর প্যাকেজিং হয়েছে পশ্চিমা আবিষ্কার হিসাবে, দাবি ISRO প্রধানের

প্রাচীনকালে ভারতই বিজ্ঞাননের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি উন্নতি করেছিল। এমনই দাবি করলেন ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থার প্রধান এস সোমনাথ। ইসরো প্রধানের কথায়, বীজগণিত, বর্গমূল, সময়ের ধারণা, স্থাপত্য, মহাবিশ্বের গঠন, ধাতুবিদ্যা, এমনকি বিমানচালনার উৎসের সন্ধান প্রথম বেদ থেকেই পাওয়া গিয়েছিল। পরে সেগুলি আরব দেশগুলির মধ্য দিয়ে ইউরোপে গিয়েছিল। এবং পরবর্তীকালে সেগুলিকে পশ্চিমা বিশ্বের বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, ইসরো প্রধান হওয়ার পাশাপাশি সোমনাথ কেন্দ্রীয় সরকারের মহাকাশ সংক্রান্ত দফতরের সচিব এবং স্পেস কমিশনের চেয়ারম্যানও।

এদিকে গতকাল বেদের সঙ্গে বিজ্ঞানের যোগসূত্রের নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও করেন সোমনাথ। তিনি দাবি করেন, ‘আগে সংস্কৃতের কোনও লিখিত লিপি ছিল না। সবাই তাই এই বিষয়গুলি শুনে শুনে মুখস্ত করতেন। এভাবেই এই ভাষাটা বেঁচে থেকেছে বহু শতাব্দী ধরে। পরে গিয়ে মানুষ সংস্কৃতের জন্য দেবনাগরী লিপি ব্যবহার শুরু করে।’ উল্লেখ্য, বুধবার মধ্যপ্রদেশের উজ্জৈনে মহর্ষি পাণিনি সংস্কৃত এবং বেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা রাখছিলেন। বিশ্বাস করা হয়, পাণিনি সংস্কৃতের ব্যকরণের রচনা করেছিলেন। এই আবহে সোমনাথ বলেন, ব্যাকরণের জন্যই বৈজ্ঞানিক ভাবনাচিন্তাকে প্রকাশ করার উপযুক্ত ভাষা হল সংস্কৃত। তিনি দাবি করেন, ইঞ্জিনিয়ার এবং বিজ্ঞানীদের প্রিয় ভাষা হল সংস্কৃত। কম্পিউটারের ভাষার সঙ্গে এর মিল আছে। তাই যারা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শিখতে চায়, তারা সংস্কৃত শেখেন।

এদিকে বিজ্ঞানের বার্তা ছাড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও সংস্কৃতের অনেক গুণ আছে বলে উল্লেখ করেন সোমনাথ। তিনি সংস্কৃত সাহিত্যের প্রশংসা করেন। তিনি দাবি করেন, সংস্কৃত এমন একটা ভাষা যেখানে সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং বৈজ্ঞানিক বিষয়তে আলাদা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রাসায়নিক বিজ্ঞান এবং বিমান চালানোর বিজ্ঞানের ফলাফল সংস্কৃতে লেখা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলিকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি এবং তা নিয়ে তখন গবেষণা করা হয়নি। একজন রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার দরুণ আমি সংস্কৃতের একটি বই দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। বইটি সৌরজগত, সময় এবং পৃথিবীর আকার এবং পরিধি সম্পর্কে ছিল।’

উল্লেখ্য, প্রাচীন গ্রন্থ ঘেঁটে প্রমাণ সংগ্রহ করে ভারতকে বিজ্ঞানের ‘বিশ্বগুরু’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ। এই প্রকল্পে হাত লাগিয়েছে ইসরো। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের অবদানের ইতিহাস খুঁজে বের করার জন্য একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দুই সংস্থা। বিজ্ঞানে ভারতের অবদানকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে ছয়টি খণ্ড প্রকাশিত করা হবে। প্রাচীন, মধ্যযুগ এবং আধুনিক সময়ের বিশদ থাকবে এই বইগুলিতে। এই প্রকল্প নিয়ে কানাঘুষো চলার মাঝেই সংস্কৃত ভাষা নিয়ে এহেন সব মন্তব্য করলেন ইসরো প্রধান।