হকার শংসাপত্র মিলবে কবে? বড়বাজারে ‘উচ্ছেদের উদ্যোগে’ উঠছে প্রশ্ন

বড়বাজারের সত্যনারাণ পার্কে হকার উচ্ছেদ করতে গিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড হল শুক্রবার। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হকার উচ্ছেদের অভিযোগ উঠল কলকাতা পুরসভা বিরুদ্ধে। যদিও পুরসভার হকার বিষয়ক দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন তারা এই হকার উচ্ছেদের বিষয়ে কিছুই জানেন না।

হকাদের অভিযোগ, স্থানীয় বিধায়ক বিবেক গুপ্তার লোকজন এই উচ্ছেদের চেষ্টা করেছে। উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে প্রথমে বচসা পরে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। ক্রেন এনে উচ্ছেদের চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। বিধায়ক বিবেক গুপ্তা আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ওই জায়গায় হকারদের দাপটে রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। মন্দিরের দরজাতে দোকান দেওয়া হচ্ছে। তাঁর দাবি, অভিযোগ পেয়ে সম্ভবত পুরসভা থেকেই লোক গিয়েছিল।

তবে এভাবে হকার উচ্ছেদ করা যায় না বলে জানিয়েছেন হকার সংগ্রাম কমিটির নেতারা। কোথায় কোনও উচ্ছেদ করতে হলে ভেডিং কমিটির অনুমিত নিতে হয়। অনুমতি পেলে তবেই উচ্ছেদ করা যায়। হকার সংগ্রাম কমিটি’র যুগ্ম সম্পাদক তথা টাউন ভেন্ডিং কমিটির সদস্য দেবাশিস দাস জানিয়েছেন আগামী বৈঠকে এই উচ্ছেদের বিষয়টি তোলা হবে। তাঁদের মতে, হকার শংসাপত্র হাতে না মেলার ফলেই এই জটিলতা বাড়ছে। 

হকার শংসাপত্র মিলবে কবে?

সম্প্রতি রাস্তা ও ফুটপাতে যত্রতত্র হকার বসে যাওয়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি উচ্ছেদেএর সমাধান চান না। বরং আইন মেনে শংসাপত্র দিয়ে তিনি হকারদের ব্যবসা করতে দেওয়া পক্ষে। তবে সেই শংসাপত্র কবে মিলবে তা এখনও জানা যায়নি। এই শংসাপত্রের জন্য পুরসভা কোনও টাকা নেবে কিনা তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতামত জানতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তার উত্তর এখনও আসেনি। তার মধ্যেই এই উচ্ছেদের চেষ্টা।

কারা পাবেন শংসাপত্র 

সম্প্রতি শহর জুড়ে হকার-সমীক্ষা করা হয়েছে। এই সমীক্ষার পর ঠিক হয়েছে, ফুটপাতের এক-তৃতীয়াংশে হকারেরা বসবেন। বাকিটা ছাড়া থাকবে পথচারীদের জন্য। এই নিয়ম যাঁরা মানবেন, তাঁদের দেওয়া হবে হকার শংসাপত্র।

এ প্রসঙ্গ মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন,’শহরের মোট আয়তনের মাত্র ৬ শতাংশ রাস্তা। তাই কোনও মতেই পিচ রাস্তায় হকার বসতে দেওয়া হবে। যদি কেউ বসেন তবে ভেন্ডিং কমিটিকে বলে ব্যবস্থা নিন। স্টল স্থানান্তর করুন। না হলে ট্রাফিক পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’

হকার বসানো বা উচ্ছেদে ‘দাদাগিরি’ নয়

হকার বসানো বা উচ্ছেদ নিয়ে কোনও রকম দাদাগিরি বরদাস্ত করবে না কলকাতা পুরসভা। পুরসভার টাউন ভেডিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন,’কলকাতার কোথাও কোনও রাস্তায় কোনও ‘দাদার’ হকার বসানো বা উচ্ছেদের ক্ষমতা নেই। হকার নিয়ে ব্যবসা করা দালালদের জায়গা নেই কলকাতায়।’

বেআইনি ডালা বা স্টল বিক্রিতে কড়া পুরসভা

ফুটপাতে পথচারীদের চলাচলের পথ সুগম করতে একটি নির্দিষ্ট অংশে ডালা বা স্টল তৈরি করে দিচ্ছে। সেই স্টল বেআইনি ভাবে অন্যকে বিক্রি করা যাবে না। এ নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘কেউ যদি হকারি করতে করতে চাকরি পান বা অন্য ব্যবসায় চলে যান, তবে তিনি ওই ডালা বা স্টলকে অন্যকে বিক্রি করতে পারবেন না। স্টলটি সরাসরি ভেডিং কমিটি হাতে চলে আসবে। । যে হকাররা ওয়েটিং লিস্টে আছেন তাঁদের ওই স্টল দেওয়া হবে। ‘