‘‌পয়সার অভাবে পড়া আটকাবে না, আমি গ্যারান্টার’‌, কৃতীদের সংবর্ধনায় দাবি মমতার

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের পর এবার নিজেকে গ্যারান্টার ঘোষণা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থের অভাবে বাংলার কোনও ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনা করা আটকাবে না বলেই তিনি আজ নিজে গ্যারেন্টার হয়ে দাঁড়ান। যা আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী করেননি। আজ, বৃহস্পতিবার মিলনমেলা প্রাঙ্গণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কৃতীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই এমন ঘোষণা করলেন তিনি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী এসে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের আবদার মেনে ছাত্র–ছাত্রীদের মাঝখানে গিয়ে তিনি নিজেকে ফ্রেমবন্দি করেন।

ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ এদিন সবার সামনে কৃতীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানান, সমস্ত বোর্ডের সফল পড়ুয়াদের অভিনন্দন। বাংলার কৃতীরা বিশ্বের গৌরব। কৃতীদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ। অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে সাফল্যের মুখ দেখেছেন। তারপরই মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি চিঠি পেয়েছি। আমি তাদের বলছি, পয়সার জন্য কারও পড়াশোনা আটকাবে না। গ্যারেন্টার আমি।’ তাই সেই চিঠিগুলি তিনি মুখ্যসচিবকে পাঠিয়ে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

কেন এমন বললেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ প্রত্যেক বছর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষা নিতে না পেরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন পড়ুয়ারা। অভাবী অথচ মেধাবী। তাঁদের পাশে কোনও ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি, ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দাঁড়ায়। আবার অনেকে তেমন কাউকে না পেয়ে মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেন। তারপর এই অভাবী মেধাবীরাই পেটের টানে রোজগার করতে বেরিয়ে পড়েন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বুঝিয়ে দিলেন, তাঁকে জানালে মুশকিল আসান তিনিই করবেন।

আর কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রীকে দেড় হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর একজন ছাত্র বা ছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কম সুদে ঋণ নিতে পারেন। তবে আজ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, অর্থের অভাব কখনও শিক্ষার অন্তরায় হবে না। তাঁর কথায়, ‘‌পড়ার পথে আর্থিক অভাব বাধা হবে না। ১০ লক্ষ টাকা করে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড মিলবে। সেখানে রাজ্য সরকারই গ্যারেন্টার। সেন্ট্রাল থেকে নতুন নিয়ম করেছে ইউজিসি। পাস কোর্সে তিন বছর, নতুন শিক্ষা নীতিতে চার বছরে অনার্স কোর্স চালু হচ্ছে রাজ্যে। স্নাতকোত্তর বা মাস্টার ডিগ্রী করা যাবে এক বছরেই। জাতীয় ক্ষেত্রে বাংলার পড়ুয়ারা যাতে পিছিয়ে না যায় সেই জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’‌