TMC Leader on Coromandel Accident: ‘৩ মাস আগে করমণ্ডলের পরিণতি হতে পারত সম্পর্কক্রান্তির’, রেলমন্ত্রীকে তোপ তৃণমূল নেতার

করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ, গোটা বিশ্ব। গত শুক্রবার ঘটে যাওয়া সেই দুর্ঘটনার রেশ আজও কাটেনি। এই আবহে এক রেল কর্তার লেখা চিঠি প্রকাশ করে বালাসোরের রেল দুর্ঘটনার দায় সরাসরি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের ঘাড়ে চাপালেন তৃণমূল নেতা সাকেত গোখলে। তাঁর অভিযোগ, রেলমমন্ত্রীর অপরাধমূলক গাফলিততেই চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এই নিয়ে দীর্ঘ টুইট করেন তৃণমূম নেতা। তিনি দাবি করেন, তিন মাস আগেই ফেব্রুয়ারিতে রেল আধিকারিক সিগন্যাল ব্যবস্থা নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন রেলমন্ত্রীকে। সেবার করমণ্ডলের পরিণতি হতে পারত সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেসের। তবে সেই চিঠি অগ্রাহ্য করা হয়। এর জেরেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ সাকেত গোখলের।

সাকেত গোখলে দাবি করেন, চলতি বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে কর্ণাটকে সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেসের সঙ্গে একটি মালগাড়ির সংঘর্ষ এড়ানো গিয়েছিল অল্পের জন্য। সেই ক্ষেত্রে ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় গলদ বুঝতে পেরে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট। এরপরই দক্ষিণ-পশ্চিম রেলের প্রিন্সিপাল অপারেশনস ম্যানেজার হরি শংকর বর্মা একটি চিঠি লিখে এই গলদ ঠিক করার সুপারিশ করেছিলেন। এই আবহে গোখলের অভিযোগ, এই চিঠি অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেওয়ারই মাশুল দিতে হল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের। গোখলে রেল কর্তার চিঠিটা টুইটারে পোস্ট করে গোটা ঘটনার বিবরণ লিখেছেন।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস হঠাৎই হোসাদুর্গ স্টেশনে থেমে যায়। কারণ ট্রেনের চালক দেখেন যে ইন্টারলকিং ট্র্যাক ‘ডাউন লাইনে’ সেট করা। যদিও ট্রেনটির ‘আপ লাইনে’ যাওয়ার কথা। এই গরমিল দেখেই লোকো পাইলট সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামিয়ে দিয়েছিলেন। রেল কর্তার লেখা চিঠিতে এই ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যদি লোকো পাইলট উপস্থিত বুদ্ধিতে ট্রেন না থামাতেন, তাহলে মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেত এক্সপ্রেস ট্রেনটি। রেল কর্তা চিঠিতে অভিযোগ করেছিলেন, ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় গুরুতর সমস্যা রয়েছে। ট্রেনকে সিগন্যাল দেওয়ার পর ইন্টারলকিং বদলে যায়। এই ব্যবস্থায় গলদ রয়েছে। এবং স্টেশন মাস্টার সেই গলদটা ধরতে পারেননি।

চিঠিতে বলা হয়, রিলে রুমে না ঢুকেই সিগন্যাল মেনটেইনার ট্র্যাকের ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করে। যেটা এই সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এক বড় গলদ। বর্তমানে যেভাবে সিগন্যালিং কেবল রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, তার জন্যই এই গলদ সম্ভব হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাকেত গোখলে। এদিকে গোখলে দাবি করেন, রেল কর্তার চিঠিতে উল্লেখ করা ছিল, অতি শীঘ্রই এই সমস্যা না মেটানো হলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ভবিষ্যতে। এরপর সাকেতের প্রশ্ন, কেন এই সতর্ক বার্তাকে অগ্রাহ্য করেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব? প্রসঙ্গত, রেলমন্ত্রী নিজে মুখেই স্বীকার করেন যে ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় গাফিলতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাঁর অভিযোগ, রেলের উচ্চপদস্থ কর্তা এবং রেলমন্ত্রীর অপরাধমূলক গাফলিততেই করমণ্ডল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই আবহে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগের দাবি করেন সাকেত।