তীব্র তাপপ্রবাহে মুরগির ডিমের উৎপাদন কমল ২৫ শতাংশ

তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস অবস্থা। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। এতে বিপদে পড়েছেন খামারিরা। গরমে মারা যাচ্ছে মুরগি। কমেছে মাংস ও ডিম উৎপাদন। যার ফলে এবছর ডিমের উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তীব্র গরমের কারণে এবছর ডিমের উৎপাদন প্রায় ২৫ শতাংশ কম হয়েছে বলে জানাচ্ছেন ডিম ব্যবসায়ীরা।

গত বছরে মে ও জুন মাসে গরমের কারণে ডিমের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল ১৫ শতাংশ। তবে এবছর গরম বেশি থাকায় ডিমের উৎপাদন কমেছে আরও ১০ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছেন, পোল্ট্রি ফেডারেশন অফ বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক মদন মাইতি। এবছর ডিম উৎপাদন কম হওয়ার জন্য মূলত তাপপ্রবাহকেই দায়ী করেছেন মদন মাইতি। তিনি বলেন, রাজ্যের মধ্যে বর্ধমান, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে ডিমের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়। তবে এই জেলাগুলিতে তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে ডিমের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরে এই সমস্ত জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকায় ডিমের উৎপাদনে মার খেয়েছেন খামারীরা। বাঁকুড়ার পোল্ট্রি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মদনমোহন কুণ্ডু জানিয়েছেন, বাঁকুড়ায় মে ও জুন মাসে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। এর ফলে ডিমের উৎপাদন ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই জেলায় ১০ শতাংশ মুরগি হিট স্ট্রোকে মারা গিয়েছে। এছাড়া, গরমের কারণে মুরগি দেখভাল করতে গিয়েও সমস্যায় পড়েছেন খামারীরা। এই গরম মুরগি ঠিকমতো খাচ্ছে না। ফলে ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে ডিমের গুণগত মানও খারাপ হচ্ছে। সাধারণ বছরের তুলনায় এবছর বাঁকুড়ায় ডিম উৎপাদন প্রায় ১২ শতাংশ কম হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সাধারণত ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপ হলেই মুরগির জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ পোল্ট্রি মুরগির শরীরে ঘর্ম গ্রন্থি নেই। পশু চিকিৎসক রাজা লোগানাথন জানান, আবহাওয়ার উন্নতি হলে ডিম উৎপাদনে ঘাটতি কমতে পারে।তাপপ্রবাহের কারণে মুরগির ডিম পাতলা হয়। যার ফলে ডিম ভাঙার প্রবণতা বেশি থাকে। শুধু তাই নয়, মুরগির শারীরিক বৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রজননে সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপাতত বৃষ্টির দিকেও চেয়ে আছেন মুরগি ব্যবসায়ীরা।