স্ত্রী স্বেচ্ছায় স্বামীর ঘর ছাড়লে খোরপোষ দাবি করতে পারেন না: এলাহাবাদ হাইকোর্ট

নিজের ইচ্ছায় স্বামীর ঘর ত্যাগ করায় এক মহিলাকে খোরপোষ দিতে অস্বীকার করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালতের বিচারপতি প্রশান্ত কুমারের একক বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, ‘ফৌজদারি আইনের ১২৫(৪) ধারায় এটি স্পষ্ট, যদি স্ত্রী স্বেচ্ছায় স্বামীর সঙ্গে থাকতে অস্বীকার করেন তাহলে তিনি খোরপোষের দাবি করতে পারেন না।’ এই বলে ওই মহিলার আবেদন খারিজ করেছেন বিচারপতি।

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ওই দম্পতি মথুরাপুরের বাসিন্দা। স্বামীর ঘর ছাড়ার পর ওই মহিলা খোরপোষের দাবি জানিয়ে মথুরার একটি ফ্যামিলির কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই মহিলা। তার ভিত্তিতে ফ্যামিলি কোর্ট ওই মহিলার স্বামীকে মাসে ১০ হাজার টাকা করে খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের আবেদন করেছিলেন ওই ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ২০১৭ সাল থেকে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, তিনি যেহেতু নিজের ইচ্ছায় স্বামীর ঘর ত্যাগ করেছিলেন তাই রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধা তিনি দাবি করতে পারেন না।

যদিও ওই মহিলা আদালতে দাবি করেন, তিনি স্বেচ্ছায় স্বামীর ঘর ত্যাগ করেননি। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালাতেন তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এছাড়া, তাঁকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্যও চাপ দেওয়া হত। এইসব কারণেই তিনি স্বামীর ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। হাইকোর্টে দায়ের করা মামলা অনুযায়ী, ওই দম্পতি ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। মহিলার দাবি, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাঁকে জোর করে গর্ভপাত করানো হয় হয়েছিল। এরপর আর তিনি গর্ভ ধারণ করতে পারেননি। অন্যদিকে, ওই মহিলার স্বামী তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যে তাঁর স্ত্রী তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের লাঞ্ছিত করেছে। অবশেষে তিনি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন।

অন্যদিকে, ওই মহিলা তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বধূ নির্যাতন, মারধর করা, ভয় দেখানো, গর্ভপাত ঘটানো সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। তাঁর আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন, তিনি যৌতুক চাওয়া হয়েছিল বলে স্বামীর ঘর ছেড়েছিলেন। কোনও স্ত্রী কোনও কারণ ছাড়া স্বামীর বাড়ি ছেড়ে যেতে চান না। তবে শেষমেষ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে।