Caste discrimination in Corporate: বেঙ্গালুরুর ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট অফিসে জাতিভেদ, আত্মহত্যা বড় পদে থাকা দলিত কর্মীর

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও দেশ থেকে এখনও জাতিভেদর ‘বিষ’ দূর হয়নি। তবে শহুরে অঞ্চলে শিক্ষার প্রসারের কারণে কিছুটা কমই দেখা যায় জাতিভেদের ঘটনা। তবে এরই মাঝে এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে বেঙ্গালুরুতে। কর্মক্ষেত্রে জাতির ভিত্তিতে বৈষম্যের অভিযোগ তোলা কর্মী আত্মহত্যা করলেন কর্ণাটের রাজধানীতে। আত্মহত্যা করার কিছুক্ষণ আগেই ইউটিউবে এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন বিবেক রাজ নামক সেই ব্যক্তি। এর আগে কর্মক্ষেত্রে জাতিভেদ এবং অত্যাচারের অভিযোগ তুলে পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ৩৫ বছর বয়সি কর্মী। জানা গিয়েছে, সেই ব্যক্তি উত্তরপ্রদেশের। বেঙ্গালুরুর একটি প্রাইভেট সংস্থার অফিসে কাজ করতেন তিনি।

বেঙ্গালুরুর ‘আইটি হাব’ হোয়াইটফিল্ডে থাকতেন বিবেক রাজ। তিনি ‘লাইফস্টাইল ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ভিজুয়াল মার্চেন্ডাইজার পদে ছিলেন। বিবেকের মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি জারি করে তাঁর সংস্থা দুঃখ প্রকাশ করেছে। এদিকে জাতিভেদ নিয়ে যে বিবেক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সে কথা মেনে নেয় সংস্থা। বিবৃতিতে সংস্থার তরফে জানানো হয়, সংস্থার অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়েছিল। সংস্থার নীতি অনুযায়ী সেই তদন্তের ফল বিবেককে জানানো হয়েছিল এবং এর প্রেক্ষিতে পদক্ষেপও করা হয়েছিল। সংস্থার তরফে বলা হয়, ‘যেহেতু এখন পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে, তাই এর থেকে বেশি কিছু আমরা বলব না। তবে পুলিশের তদন্তে সব ধরনের সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত।’

জানা গিয়েছে, গত ৩ জুন বিবেক আত্মহত্যা করেন। তবে সেই ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পরে তাঁর মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ্যে এসেছে। এর আগে ৪ জুন বিবেকের বাবা রাজকুমার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। সংবাদমাধ্যমকে ৬৭ বছর বয়সি শোকার্ত বাবা বলেন, ‘পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পর এবং আত্মহত্যার আগে গত ৩ জুন আমাকে দু’বার ফোন করেছিল বিবেক। তবে আমাকে খুলে কিছুই বলেনি সে। আমার শরীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলেছিল ও। আমি ২০ বছর আগে আমার স্ত্রীকে হারিয়েছিলাম। আমার ছেলেই আমার সবকিছু ছিল। আমি তার পড়াশোনার জন্য সবকিছু করেছিলাম। এখন সেও ছেড়ে চলে গেল। আমাকে বাকিটা জীবন এবার একাই কাটাতে হবে।’

এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হোয়াইটফিল্ড পুলিশ স্টেশনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪ এবং ৩০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এদিকে বিবেকের শেষ ইউটিউব ভিডিয়ো অনুযয়ী, তার অফিসের কয়েকজন সহকর্মী অনবরত তাঁকে হেনস্থা করতেন। এবং সেই বিষয়ে তিনি অভিযোগ জানানোয় সেই হেনস্থা আরও বেড়ে যায়। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেই মারাথাল্লি থানায় এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিবেক। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, বিবেক নিজের সংস্থার এইচআর বিভাগে নিজের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। তবে সংস্থার তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।