Law Commission notice on Uniform Civil Code: ১৮-র পুনরাবৃত্তি ২৩-এ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে মত জানতে নোটিশ জারি আইন কমি

গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার বার্তা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই বহু বিজেপি শাসিত রাজ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে। এই সবের মাঝেই এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে তৎপরা দেখাতে শুরু করল জাতীয় আইন কমিশন। একটি নোটিশ জারি করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আম জনতা এবং বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের থেকে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে আগের আইন কমিশনও বিভিন্ন সংগঠনের থেকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে মতামত চেয়েছিল। তবে এরপর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জয়ের পর এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ২০২৪ সালের ভোটের আগে ফের একবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে তৎপর হল আইন কমিশন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গঠিত হয়েছিল ২২তম আইন কমিশন। এটির কার্যকালের মেয়াদ ২০২৪ সালের অগস্ট। এই কমিশনের বক্তব্য, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করতে হবে। প্রসঙ্গত, ভারতের গণপরিষদ ৪৪ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, যখনই দেশের সব রাজ্যের বিধায়ক এবং ভারতের সংসদের জন্য পরিস্থিতি অনুকূল হবে তখনই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করা উচিত। এই অনুচ্ছেদকে হাতিয়ার করেই বারংবার জনসংঘ থেকে বিজেপি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে সওয়াল করে এসেছে। একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে ইতিমধ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার জন্য আইন আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে জাতীয় স্তরে এখনও এই আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। এদিকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়। তবে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে শুধুমাত্র সংসদের।

এই আবহে পরবর্তী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদের তিনটি অধিবেশন হবে – বাদল, শীতকালীন এবং বাজেট। এদিকে আইন কমিশনের নোটিশ অনুযায়ী, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে মতামত জানাতে হবে নাগরিকদের। বুধবার এই নোটিশ জারি করা হয়। এই আবহে বাদল অধিবেশনে এই নিয়ে পদক্ষেপ করলেও করতে পারে সরকার। তবে বিলের খসড়া তৈরি করতে বেশ সময় লাগে। এই আবহে আসন্ন বাদল অধিবেশনে হয়ত এই সংক্রান্ত বিল নাও আনা হতে পারে। তবে লোকসভা ভোটের আগে যে এই নিয়ে সরকার তৎপরতা দেখাতে পারে, তা স্পষ্ট। উল্লেখ্য, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, সন্তান দত্তক নেওয়া থেকে সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে দেশে ধর্ম নির্বিশেষে একটি আইন কার্যক করার দাবি করে এসেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের তোষণ ও তুষ্টির রাজনীতির কারণেই ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে এখনও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করেনি কংগ্রেস। এই আবহে বারবার নির্বাচনী ইস্তেহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়টি উল্লেখও করেছে বিজেপি। এই আবহে ২০২৪ সালের আগে এই নিয়ে সরকার বড় পদক্ষেপ করে কি না, সেদিকেই নজর সবার।