Negative effects on Mosquito: বিপজ্জনক ভাইরাস ছড়াতে পারে গাছের মগডালের মশা, মহামারী হবে না তো? চলছে গবেষণা

মশার কারণে মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে পড়ার উদাহরণ কম নয়৷ করোনা বহন না করলেও আগামী মহামারীর ভাইরাস মশা যে বহন করবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই৷ বিজ্ঞানীরা এমন বিপজ্জনক মশা সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করছেন৷

অ্যাডাম হেন্ডি ও তাঁর টিম অ্যামাজন রেন ফরেস্টে ফাঁদ পাতেন৷ তাঁরা আসলে মশার পিছনে ধাওয়া করছেন৷ কারণ সেই মশা সম্ভবত এমন এক ভাইরাস বহন করতে পারে, যা আগামী মহামারীর কারণ হবে৷ সেক্ষেত্রে ভাইরাস শিকারিরা সময় থাকতে সেই মশা শনাক্ত করতে চান৷ প্রথম দল হিসেবে তাঁরাই প্রাণীর দেখা পেতে পারেন৷ তবে তার জন্য চাই অনেক ধৈর্য ও অধ্যাবসায়৷

গাছের মাথার উপর বিশেষ বিপজ্জনক মশা বাস করে বলে জানা গিয়েছে৷ অ্যাডাম ও তাঁর টিম সেই মশাই ধরতে চান৷ অ্যাডাম ও তাঁর টিম এমন মশার সন্ধান করছেন, যেগুলি ওয়েস্ট নাইল বা ডেঙ্গুর মতো তথাকথিত আরবোভাইরাস বহন করে৷ সেই ভাইরাস মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরে বংশবৃদ্ধি করে এবং মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷ কিন্তু সেই মশার উপর নজরদারি চালানো অত্যন্ত কঠিন৷

প্রায় ১০,০০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে অপেক্ষাকৃত অক্ষত রিজার্ভ ফরেস্টে আরও একটি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে৷ প্রশ্ন হল, জঙ্গলের গভীরের মশা কি বাইরের অংশের মশার তুলনায় ভিন্ন ভাইরাস বহন করে? সেই প্রশ্নের জবাব পাওয়া অত্যন্ত কঠিন৷ অ্যাডাম হেন্ডি বলেন, ‘প্রথমে মশা ধরতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে, কারণ আগে এই প্রাণী সম্পর্কে বেশি গবেষণা হয়নি৷ সেই মশা ধরার বিষয়ে আমরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছি৷ সেই প্রক্রিয়ায় আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে৷’

সত্যি বিপজ্জনক মশা ঠিক কোথায় বাস করে? অ্যাডামের অনুমান, গাছের একেবারে উপরের অংশের মশা মানুষের জন্য হুমকি বয়ে আনে৷ সেই ধারণা প্রমাণ করতে তিনি জঙ্গলের মাঝে দশ মিটার উঁচু রিসার্চ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছেন৷ অ্যাডাম বলেন, ‘গাছের মাথার মশা মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ সেই প্রাণী এমন প্যাথোজেন বহন করে, সাধারণত আমরা যেগুলির সংস্পর্শে আসি না৷ আমাদের ইমিউন সিস্টেম সেই বিপদ চেনে না৷’

গাছের মাথায় যে প্রজাতির মশা বাস করে, সেই প্রাণী উষ্ণ ও শুকনো পরিবেশ পছন্দ করে৷ নীচে জঙ্গলের মাটির উপর অন্য প্রজাতির মশা দেখা যায়, যারা ছায়া ও শীতল পরিবেশে থাকতে চায়৷ কিন্তু বিপজ্জনক মশা কখন গাছের মগডাল থেকে নীচে নামে? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে অ্যাডাম ও তাঁর টিম বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন জায়গায় মশা ধরছেন৷ তিনি মনে করেন, ‘আমরা যখন জঙ্গলের ধারে গাছ কেটে ভবন অথবা সড়ক তৈরি করি, আমরা সেখানকার মাইক্রোক্লাইমেট বদলে দিই৷ গাছের মগডালের নীচের পরিবেশ তখন গরম ও শুকনো হয়ে পড়ে৷ ছাউনির নীচে যে প্রজাতির মশা থাকে, তাদের সেটা পছন্দ৷ সেক্ষেত্রে সেই প্রজাতি জমির আরও কাছাকাছি চলে আসে৷ তখন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায়৷

ঘন জঙ্গলে মশার উপর নজরদারি হয়তো সম্ভব৷ কিন্তু রেন ফরেস্টে গাছ কাটা কমানো আরও সহজ উপায়৷ কারণ প্রতিটি নতুন সড়ক হয়তো বিপজ্জনক মশা ডেকে আনছে৷

(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)