Antony Blinken in China: চরমে দ্বন্দ্ব, এরই মাঝে চিনে পা রাখলেন মার্কিন বিদেশ সচিব ব্লিনকেন

তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চরম দ্বন্দ্ব আমেরিকা ও চিনের মধ্যে। এরই মাঝে বিগত পাঁচবছরে এই প্রথম কোনও মার্কিন উচ্চ পদস্থ কর্তা পা রাখলেন চিনে। দুই দেশের সম্পর্ক যখন তালানিতে গিয়ে ঠেকেছে, তখনই সেখানে গেলেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি দু’দিনের সফরে বেজিং গিয়েছেন। বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করার কথা তাঁর। তবে দ’দিনের এই সফরে যে আমেরিকা ও চিনের মধ্যকার পারদ সেভাবে নামবে না, তা জানা আছে দু’দেশেরই।

এদিকে বিশ্বের দ’টি সর্ববৃহৎ অর্থনীতির পারস্পরিক দ্বন্দ্ব যে তাদের জন্য ভালো নয়, সেটাও ভালো করেই জানে বেজিং ও ওয়াশিংটন। তাই প্রতিনিয়তই দুই দেশের গলায় শোনা যায় ‘স্থিতিশীলতার বাণী’। তবে তাইওয়ান ইস্যুতে বারবারই সম্পর্ক বিগড়েছে চিন এবং আমেরিকার। এদিকে আগামী বছর আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে সেদেশের অর্থনীতির দিকে নজর দিতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে। এবং মার্কিন অর্থনীতির প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে চিন। আবার আগামী বছর তাইওয়ানেও নির্বাচন রয়েছে। বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই তাইওয়ান সংলগ্ন এলাকায় নিজেদের বাহুবল দেখিয়ে আসছে চিন। এমনকি বহুবার তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে চিনা যুদ্ধবিমান। এই আবহে চিন যদি তাইওয়ানের ওপর সত্যি সত্যি হামলা করে, তাহলে আমেরিকার অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে কৌতুহলী সবাই।

এই সবের মাঝেই কয়েক মাস আগে মার্কিন আকাশসীমায় চিনা ‘গুপ্তচর বেলুন’ দেখা গিয়েছিল। সেই বেলুনগুলিকে ধ্বংস করতে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছিল আমেরিকা। এমনকী কানাডার আকাশেও এই ধরনের বেলুন দেখা গেলে তা খতম করে মার্কিন যুদ্ধবিমান। এই আবহে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয় চিনের। এই আবহে চার মাস আগে চিন সফরে আসার কথা থাকলেও ব্লিনকেন সেই সফর পিছিয়ে দেন। তবে এবার শেষ পর্যন্ত চিন সফরে এলেন ব্লিনকেন। এদিকে গত অগস্ট থেকেই তাইওয়ানকে ঘিরে ধরে ব্যাপক সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছিল চিন। মার্কিন কংগ্রেসের প্রাক্তন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে যাওয়ার পর চিনা হামলার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল কয়েক গুণ। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে চাইছে আমেরিকা।

চিনের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার আগে মার্কিন মাটিতে দাঁড়িয়ে ব্লিনকেন বলেন, ‘দুই দেশ যাতে একে অপরকে ভুল না বোঝে সেটা দেখার দায়িত্ব আমার। তাই দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হবে এই সফরে। দুই দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। তবে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা সুস্থ ভাবে চালিয়ে যেতে হলে কূটনীতির প্রয়োজন রয়েছে। দেখতে হবে যাতে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা সংঘাতে না পরিণত হয়।’ এদিকে ব্লিনকেনের চিন সফরের আগে আমেরিকায় গিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরের বিদেশমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান। তিনি বলেন, ‘ব্লিনকেনের এই সফর প্রয়োজনীয়। তবে এটা যথেষ্ঠ নয়। দুই দেশের মূল্যবোধের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। পারস্পরিক সম্মান এবং বিশ্বাস তৈরি করতে সময় লাগবে।’ এদিকে জানা গিয়েছে, চিনের উদ্দেশে উড়ে যাওযার সময় বিমানেই জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন ব্লিনকেন।