বিপুল পরিমাণ খোকা ইলিশ ধরা হয়েছে, এমন কাজে মৎস্যজীবী–ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ

ছোট ইলিশ ধরার অবৈধ কারবার শুরু হয়ে গেল সমুদ্র উপকূলে বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে নামখানা–কাকদ্বীপে বিপুল পরিমাণ খোকা ইলিশ বোঝাই ট্রলার এসে থামল। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এমন কাজে ক্ষুব্ধ মৎস্যজীবীদের একটা বড় অংশ। আবার ব্যবসায়ীরাও পরে ক্ষতির আশঙ্কা করে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। মৎস্যজীবীদের হিসেবে, ১০টি ট্রলার খোকা ইলিশ নিয়ে বন্দরে এসেছে। সব মিলিয়ে ছাব্বিশ টন খোকা ইলিশ ধরা হয়েছে। এই ঘটনার পর ব্যবসায়ীদের আসঙ্কা, এখন খোকা তুলে নেওয়া হলে পরে আর বড় ইলিশ পাওয়া যাবে না। মাছ বড় না হলে দামও পাওয়া যাবে না। ক্ষতির মুখ দেখতে হবে ব্যবসায়ীদের।

এদিকে ১৬ জুন তারিখ থেকে সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে। তারপর প্রচুর ট্রলার গিয়েছে ইলিশ ধরতে। রবিবার ও সোমবার ট্রলারগুলি বিপুল পরিমাণ খোকা ইলিশ নিয়ে ফিরেছে। এক শ্রেণির মৎস্যজীবী বাংলাদেশের কাছে গিয়ে ছোট ইলিশ ধরে নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ। এই ছোট ইলিশের গড় ওজন দেড়শো থেকে আড়াইশো গ্রাম। আর নিয়ম হল, কমপক্ষে ৫০০ গ্রামের নীচে ইলিশ ধরা যায় না। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ইলিশ ধরতে মৎস্যজীবীদের ৯০ সেন্টিমিটারের কম ফাঁসযুক্ত জাল ব্যবহার করা এবং ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ ধরা বেআইনি। কিন্তু বহু ট্রলার ১৫০ গ্রাম থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের বিপুল পরিমাণ ইলিশ নিয়ে আসে।

অন্যদিকে প্রশাসন এবং মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ছোট ইলিশ ধরা যাবে না। কিন্তু সেই কথা শোনা হল না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য এখন মৎস্য বিভাগের বেশিরভাগ কর্মী ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই নজরদারিরও অভাব ঘটছে। সেটার সুযোগ পুরোপুরি নেওয়া হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজন মাইতির অভিযোগ, কোনও নজরদারি ছাড়াই ইলিশ মরশুমের শুরুতেই যেভাবে অসাধু ট্রলার মালিক ও কারবারি ছোট ইলিশ ধরার ব্যবসা ফেঁদে বসেছে তাতে দ্রুত রাজ্যের মৎস্য শিল্পের উপর ভয়ঙ্কর আঘাত আসবে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই খোকা ইলিশ ধরার ঘটনাটি মৎস্য দফতরে জানানো হয়েছে। অবিলম্বে প্রশাসন এই অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক চাইছেন মৎস্যজীবী এবং ব্যবসায়ীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এডিএফ (মেরিন) পিয়াল সর্দার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ছোট ইলিশ ধরার প্রবণতা ঠেকাতে আমরা সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছি। আর এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’ বড় ইলিশ না হলে পরের দিকে দাম মিলবে না বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।