Imran Khan: ‘কাশ্মীরের জন্য ঠিক হয় রোডম্যাপ, ইসলামাবাদে আসার কথা ছিল মোদীর’, দাবি ইমরান খানের

কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি চুক্তি নিয়ে কাজ চলছিল। এমনই দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই প্রধান ইমরান খান। ইমরানের আরও দাবি, ২০১৯ সালে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরও এই শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছিল পাকিস্তান। প্রাক্তন পাক সেনা পধান জেনারেল কামার বাজওয়া এই শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং তিনি এটিকে সমর্থন করছিলেন বলে দাবি করেন ইমরান খান। ইমরান বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে ভারতের কোনও একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করার কথা ছিল। এরপর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ছিল ইসলামাবাদের।’ উল্লেখ্য, আমেরিকা ভিত্তিক থিংক-ট্যাংক ‘আতলান্তিক কাউন্সিল’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সব বলেছেন ইমরান।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক ভাবে বাজওয়ার সঙ্গে ইমরানের সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। তবে ক্রমেই সেই সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। আইএসআই প্রধান নিয়োগ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় দুই পক্ষের। পরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পালাবদলের সময় সেনা ‘নিরপেক্ষ’ থাকে। যদিও ইমরানের অভিযোগ, পাক সেনা এবং আমেরিকার কারণেই তাঁর সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকেই একাধিকবার পাকিস্তানি জেনারেলকে তুলোধোনা করেছেন ইমরান। এদিকে কয়েকবার সংবাদমাধ্যমে জেনারেল বাজওয়াকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘এই মূহুর্তে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করার শক্তি পাক সেনার নেই।’ বাজওয়ার এহেন বাস্তবমুখী মন্তব্যের জন্য অবশ্য তাঁকে তোপ দেগেছিলেন ইমরান।

ইমরান খান বলেন, ‘বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সেই সময় আলোচনা হচ্ছিল কি না, তা আনি জানি না। তবে আমার এটা মনে আছে যে স্থিতাবস্থা বজায় রাখ পক্ষে দুই দেশ সম্মত হত। ভারত কিছু বিষয়ে ছাড় দেবে বলেছিল। তাছাড়া কাশ্মীর নিয়ে কোনও রোডম্যাপের ঘোষণা করারও কথা ছিল ভারতের। এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ইসলামাবাদে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ছিল আমার। তবে শেষ পর্যন্ত সেটা আর কার্যকর হয়নি।’ এদিকে গত বেশ কয়েকদিন ধরেই পাক সংবাদমাধ্যমে এই ধরনের শান্তি প্রক্রিয়ার রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। এই বিষয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে ২০০৩ সালের পর ২০২১ সালে ফের একবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন চুক্তি হয়েছিল। দীর্ঘ ব্যাকচ্যানেলিংয়ের পর সেই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছিল। বলা হয়, জেনারেল বাজওয়া এবং প্রয়াত সিডিএস বিপীন রাওয়াতের প্রচেষ্টায় সেই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছিল ২০২১ সালে।

ইমরান বলেন, ‘২০১৯ সালের অগস্টের পর আমাদের কী করণীয় ছিল? আমরা কী সেই পরিস্থিতিকে মেনে নিতাম? নাকি কাশ্মীরের মানুষের পাশে দাঁড়াতাম? যারা এতদিন ধরে এত আত্মবলিদান দিল… তার আগে তো আমি নিজেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের উন্নতির জন্য চেষ্টা করেছিলাম। আমি ক্ষমতায় এসেই ভারতকে বলেছিলাম, আপনারা এক ধাপ নিলে আমরা দুই ধাপ এগোব।’ এদিকে বাজওয়ার ‘দুর্বল সেনা’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ইমরান বলেন, ‘জেনারেল বাজওয়ার আমার সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছিলেন যে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করার পরিস্থিতিতে আমরা নেই। তবে জনসমক্ষে এই ধরনের কথা কে বলে? সেনা প্রধান যদি বলে যে আমরা দুর্বল, তাহলে কীভাবে হবে। আর এমনিতেও ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের প্রসঙ্গই বা কোথা থেকে উঠছে। দুই দেশের মধ্যে বিবাদ থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে মেটাতে হবে। ঝামেলা না মিটলে কথা চালিয়ে যেতে হবে।’