White House on Modi’s US Visit: মোদীর মার্কিন সফরের সঙ্গে চিন-রাশিয়ার কোনও সম্পর্ক নেই, বলল হোয়াইট হাউজ

নরেন্দ্র মোদীর ভারত সফরের সঙ্গে চিন বা রাশিয়ার কোনও যোগ নেই। স্পষ্ট জানিয়ে দিল হোয়াইট হাউজ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও উন্নত করার লক্ষ্যেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এই মার্কিন সফর। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কোঅর্ডিনেটর জন কার্বি এই বিষয়ে বলেন, ‘এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা ভারতকে অন্য কোনও ক্ষেত্রে আলাদা ভাবে কাজ করতে বা পদক্ষেপ করতে রাজি করানো হবে না। এই সফরের লক্ষ্য সেটা নয়। এই সফরের সঙ্গে রাশিয়ার কোনও যোগ নেই। আমাদের দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্যই এই সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।’

বিগত কয়েক বছরে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক বেশ গভীর হয়েছে। এর নেপথ্যে অন্যতম দু’টি কারণ হল চিন এবং বাণিজ্য। গত অর্থবর্ষে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৯১ বিলিয়ন ডলার। এদিকে চিনা আগ্রাসন নিয়ে আমেরিকা বরাবরই সরব। এই আবহে এশিয়ায় চিনকে টক্কর দেওয়ার জন্য ভারতের ওপরই বাজি ধরতে চায় আমেরিকা। তবে এই সবের মাঝেই ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে জটিলতা তৈরি হয়েছিল ভারত-মার্কিন সম্পর্কে। দুই দেশের ‘বন্ধুত্বে’ সেই অর্থে চিড় না ধরলেও আমেরিকার মনে যে চাপা অসন্তোষ ছিল, তা স্পষ্ট। কারণ, রাশিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে রাষ্ট্রসংঘে কোনও প্রস্তাবনাতেই ভোট দেয়নি ভারত। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছে দিল্লি। এরই মাঝে অবশ্য রাশিয়া থেকে সস্তায় তেলও কিনে চলেছে ভারত।

প্রসঙ্গত, ভারত ঐতিহাসিক ভাবে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ। এবং এর জন্য অনেক অর্থেই ‘দায়ী’ আমেরিকা। ১৯৬৫ সালে আমেরিকার থেকে অস্ত্র কিনতে চেয়েছিল আমেরিকা। তবে ভারতের বদলে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল আমেরিকা। সেই সময় থেকেই ভারত সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পরবর্তীতে রাশিয়ার থেকে অস্ত্র কিনতে শুরু করে। ভারতের বর্তমান অস্ত্রভাণ্ডারে প্রায় ৫০ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমনাদি করা। তবে আমেরিকার সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে বাণিজ্যিক কারণে সম্পর্ক ভালো হয়েছে ভারতের। সেই সম্পর্ক সামরিক ও কৌশলগত জোটেও পরিণত হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি ভারত। এই আবহে রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও ভোটাভুটিতেই অংশ নেয়নি ভারত। তবে বারবারই কূটনীতি ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পক্ষে সওয়াল করেছে ভারত।

বিগত বছরে রাশিয়ার অস্ত্রের ওপর ভারতীয় নির্ভরশীলতা কমাতে দিল্লিকে চাপ দিয়েছে আমেরিকা। তবে সেই চাপের কাছে নতি স্বীকার না করেই রাশিয়া থেকে এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম কিনেছে ভারত। এদিকে রাশিয়ার থেকে জ্বালানি তেলও কিনে চলেছে ভারত। তবে মোদীর এই মার্কিন সফরকালে ভারত ৩১টি এমকিউ-৯বি ড্রোন কিনতে চলেছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে। যা দুই দেশের বাণিজ্যিক এবং সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে। এই আবহে জন কার্বি বলেন, ‘বাইডেন প্রশাসন কাজ শুরুর পর থেকেই ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। আমরা সেই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে চাই।’