মণিপুরে হিংসা থামছেই না। এরই মাঝে সেই রাজ্যে বিক্ষোভের নয়া চেহারা সামনে এসেছে। মহিলারা ‘ঢাল’ হয়ে সেনার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। সেনার অপারেশনে জেনে বুঝে বাধা সৃষ্টি করছেন হাজার হাজার মহিলা। এই আবহে পিছু হটছে সেনা। তবে একটি ভিডিয়ো টুইট করে এবার সেনা স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দিল যে পিছু হটে সেনা মাবনিকতা দেখাচ্ছে। তবে মানবিকতা দেখানোর অর্থ এই নয় যে সনা দুর্বল। প্রসঙ্গত, গতকালই সেনার তরফে বিবৃতি জারি করে ববা হয়, ‘মহিলা বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন সময়ে সেনার পথ আটকে দিচ্ছে এবং অভিযানে বাধা সৃষ্টি করছে।’
সেনার তরফে এই আবহে গতকাল একটি ভিডিয়ো টুইট করা হয়। ভিডিয়োটি গতসপ্তাহের একটি ঘটনার। সেখানে বেশ কয়েক সেনা জওয়ানকে প্রায় ১০০০-১২০০ মহিলা ঘিরে রেখেছেন। মণিপুরের ইথাম গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। সেই সময় ১২ জন সশসস্ত্র বিচ্ছিনতাবাদীকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছিল সেনা। তবে সাধারণ মানুষের বাধার মুখে জঙ্গিদের পিছনে আর যায়নি সেনা। নয়ত সেখানে সাধারণ মানুষেরও রক্ত ঝরত। তাই নিরস্ত্র মানুষের জীবন রক্ষা করতে আর জঙ্গিদের ধরতে যায়নি সেনা। এই নিয়ে সেনার স্পিয়ার কোর এক টুইট বার্তায় লিখেছে, ‘মণিপুরে নারী কর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে রুট অবরোধ করছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অপারেশনে হস্তক্ষেপ করছে। এই ধরনের অযৌক্তিক হস্তক্ষেপের জেরে নিরাপত্তা বাহিনী জনসাধারণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করতে ব্যর্থ হবে। এটা শান্তি ফেরানোর প্রতিক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর। ভারতীয় সেনাবাহিনী শান্তি ফেরানোর জন্য প্রচেষ্টা করে চলেছে। আমাদের সমর্থন করুন। সমাজের সব অংশের কাছেই এই আবেদন করতে চাই আমরা।’
উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরই মধ্যে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।
প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও।