‘সেরা পড়ুয়াকে উপাচার্য করা হবে’‌, রাজ্যপালের মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে

দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়ে তোলাই এখন অগ্রাধিকার। আর তার জন্য যোগ্য ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ করতে কোনও বাধা নেই। বাংলা থেকেই সেই কাজ শুরু করা হবে। গতকাল শুক্রবার কালিম্পং কলেজে এসে এমনই বার্তাই দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর এই বক্তব্য শোনার পর থেকে সমাজের বুকে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। আজ, শনিবারও নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে রসিকতা করতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে দার্জিলিংয়ে আসেন রাজ্যপাল। তারপর সেখানে নানা কাজ করতে শুরু করেন। তাছাড়া উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে কালো পতাকা দেখতে হয়েছিল।

এবার স্থানীয় কলেজের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সন্ত্রাস এবং দুর্নীতি নিয়ে সরব হন। এই সভায় তিনি বলেন, ‘‌শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। আর গড়তে হবে সন্ত্রাস মুক্ত সমাজ। তাই ঐক্যবদ্ধভাবেই সকলকে এই কাজ করতে হবে।’‌ রাজ্যপালের বক্তব্যকে সমর্থন করেন উপস্থিত বহু ছাত্রছাত্রী। কিন্তু রাজ্যপালের এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এখন রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাত চলছে। তাছাড়া বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এই দুর্নীতির অভিযোগ জেল খাটছেন। সেখানে উত্তরবঙ্গের কলেজে এসে এমন বক্তব্য সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। আর এখানেই তিনি তৈরি করেছেন বিতর্ক।

ঠিক কী বলেছেন রাজ্যপাল?‌ এদিকে কালিম্পং কলেজে এসে উপাচার্য নিয়ে নতুন কথা বলেছেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, ‘‌এবার বাংলা থেকে একজন পড়ুয়া–উপাচার্য পাবে। উজ্জ্বল ও সেরা পড়ুয়াকে উপাচার্য করা হবে। তিনি হয়তো এখন গবেষণা করছেন। তবে অতি দ্রুত উপাচার্য হবেন। যা ভারতে প্রথম। আমি উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তাতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন তৈরি এবং হিংসামুক্ত সমাজ গড়ে তোলা দরকার। তাই বিষয়টিতে তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে।’‌ এই পড়ুয়া–উপাচার্য নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন:‌ এবার কিউআর কোড চালু করল সিপিএম, পঞ্চায়েত নির্বাচনে অর্থ সংগ্রহে নতুন ভাবনা

ঠিক কী বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী?‌ এই বিষয়ে রাজ্যপালকে একদিকে কটাক্ষ অন্যদিকে পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি পাল্টা সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌কে, কোথায়, কী বলেছেন তা নিয়ে আমার কাছে নির্দিষ্ট কোনও খবর নেই। তবে পড়ুয়াদের উপাচার্য করার ভাবনা নিয়ে এটুকুই বলতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) উপাচার্য পদে নিয়োগের মাপকাঠি নির্দিষ্ট করেছে। তাতে বলা আছে, যিনি উপাচার্য হবেন, তাঁর অন্তত দশ বছর অধ্যাপক হিসাবে পড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যিনি দশ বছর অধ্যাপক পদে কাজ করবেন তাঁর সামগ্রিক পড়ানোর অভিজ্ঞতা প্রায় কুড়ি বছরে গিয়ে দাঁড়াবে।’‌