‘‌এখানকার শিক্ষকরা কোনও কথা শোনেন না’, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক

আগেও তাঁর মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করেছিল। এবারও তাঁর মন্তব্য তুমুল বিতর্কের জন্ম দিল। শিক্ষক–শিক্ষিকাদের সামনেই তাঁদের সরাসরি অপমান করে বসলেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের সামনেই এমন মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এখন তা নিয়ে তোলপাড় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হ্যাঁ, তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এবার শতবর্ষে পা দিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় শিক্ষাসত্র। আর সেখানে শতবর্ষের অনুষ্ঠানে তাঁর মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হল। আর এই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন ছাত্রছাত্রীদের সামনেই।

ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য–রাজ্যপাল বিরোধ চলছে। সেখানে এমন ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি উপাচার্যের মাধ্যমে শিক্ষক–শিক্ষিকাদের ছাত্রছাত্রীদের সামনেই অপমান বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কারণ শিক্ষক–শিক্ষিকাদের উদ্দেশে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‌এখানকার শিক্ষকরা কোনও কথা শোনেন না’। শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করার জেরে আনন্দে ভাটা পড়ল। সবাই হঠাৎ এই মন্তব্যের কারণ কিছু বুঝে না উঠলেও অপমানিতবোধ করলেন শিক্ষক এবং শিক্ষিকারা। আর তাতেই বিশ্বভারতীতে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

এই বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের পুঁথিগত বিদ্যার সঙ্গে সর্বাঙ্গীণ শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই বিদ্যালয়ের দায়িত্ব কবিগুরু দেন সন্তোষচন্দ্র মজুমদারকে। এখন মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার বিপরীতে যে জায়গাটি আছে সেখানেই ছিল সন্তোষচন্দ্র মজুমদারের বাড়ি। তাই প্রাথমিকভাবে শিক্ষাসত্রের সূচনা হয় তাঁর বাড়িতেই। পথচলা শুরু হয় ১৯২৪ সালের ১ জুলাই। তবে দু’বছর চলার পরে ১৯২৬ সালে সন্তোষচন্দ্রবাবু প্রয়াত হন। তারপর ১৯২৭ সালে শিক্ষাসত্রকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীনিকেতনে। এখানের স্কুলটি স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। সেই শিক্ষাসত্র এখনও চলছে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌নির্দল নয়, দলের প্রার্থীদের হয়েই প্রচার করব’‌, বিদ্রোহে ইতি টানলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ এখানেই শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন হল। গান থেকে স্মৃতিচারণ–সহ নানা অনুষ্ঠান হয় এখানে। কিন্তু আনন্দে ভাটা পড়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মন্তব্যে। তিনি বলেন, ‘‌এখানকার শিক্ষকরা কোনও কথা শোনেন না। মাস্টারমশাইরা কাজকর্মও করেন না। তাঁদের বলে কোনও লাভ হয় না কারণ তাঁরা চাকরি করতে আসেন। ছাত্রছাত্রীরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই যা বলার তাদের উদ্দেশেই বলব।’‌ উপাচার্যের এই বক্তব্যে ছাত্রছাত্রীদের সামনে অপ্রস্তুতে পড়ে যান শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁরা অপমানিতবোধ করেন। আর তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।