৮ বছর ভোটে লড়তে পারবেন না ব্রাজিলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারো

জাইর বলসোনারো গত নির্বাচনে হেরেছিলেন বামপন্থী লুলার কাছে, তারপরও তার সমর্থক গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দেশজুড়ে, হামলা চালায় সংসদ ভবনে। এবার ব্রাজিলের প্রাক্তন এই রাষ্ট্রপ্রধান হারালেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগও। ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগে ব্রাজ়িলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো ভোটে লড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল ব্রাজিলের সুপ্রিম ইলেকটরাল কোর্ট। এই কোর্ট সে দেশের নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালত।  

আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, আপাতত আট বছর ব্রাজিলের কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান। এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের কৌঁসুলিরা, খবর বিশেষ সূত্রে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আপাতত আট বছরের জন্য কার্যত দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে গেলেন বলসোনারো। 

চলতি বছরে ব্রাজিলের নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ব্যালট হ্যাক করে কারচুপি করার সম্ভাবনা আছে, এমন দাবির মাধ্যমে বলসোনারো দেশটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। বলসোনারোর আইনজীবীদের যুক্তি, তৎকালীন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য নির্বাচনি ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু গণহারে হারের পর এই আইনি নিষেধাজ্ঞা কার্যত ‘অতিদক্ষিণপন্থী’ রাজনীতিবিদের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। 

ব্রাজিলের আইন অনুসারে, সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় অর্থাৎ, গত বছরের ২ অক্টোবর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এই রায়ই বহাল থাকলে জাইর বলসোনারো ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তাকে অপেক্ষা করতে হবে ২০৩০ সালের নির্বাচনের জন্য। এছাড়াও  ২০২৪ ও ২০২৮ সালের স্থানীয় স্তরের নির্বাচনগুলিতে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। বিচারপতিদের বেঞ্চে ৫-২ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এই রায় দেওয়া হয়। রায় শোনার পর প্রাক্তন সর্বাধিনায়ক প্রতিক্রিয়া দেন, ‘পিছন থেকে পিঠে ছুরি মারা হয়েছে।’ এই পরিস্থিতিতেও তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ব্রাজিলের ডানপন্থী রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সে কাজ করে যাবে।

প্রসঙ্গত, জাইর বলসোনারো বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী শাসন, আমাজন ধ্বংসের মত একাধিক অভিযোগ ছিল। বিশ্বজুড়ে দক্ষিণপন্থার জয়জয়াকারের মাঝেও তাই দেশের বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে সরিয়ে নিয়ে আসে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের কর্মী লুলাকে। এখন দেখার ব্রাজিল তথা লাতিন আমেরিকার রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি কোন দিকে এগোয়। বলসোনারোর সাজা বহাল থাকে কিনা সেটাও দেখার। আদালতের রায় বলসোনারোর বিপক্ষে গেলেও এখনও ব্যাপক অংশের সমর্থন রয়েছে তাঁর অতিদক্ষিণপন্থী রাজনীতির প্রতি। ফলে আগামীতে মতাদর্শগত ও ময়দানের লড়াই যে জারি থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।