Cyber crime: ঝাঁ চকচকে হোটেল পুজোর বুকিং? অগ্রিম টাকা পাঠালেই সাফ হয়ে যাচ্ছে অ্যাকাউন্ট

নিত্যনতুন পন্থায় প্রতারণা করছে সাইবার অপরাধীরা। ইদানিং হোটেল বুকিংয়ের নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে সাইবার প্রতারকরা। জনপ্রিয় কয়েকটি হোটেলের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে প্রতারণাচক্র চালাচ্ছে প্রতারকরা। আর কয়েক মাস পরে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। বছরের এই সময়টা লম্বা ছুটির কারণে বহু মানুষ বাইরে ঘুরতে যান। তাই এখন থেকেই হোটেল বুকিং শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। বহু মানুষ সেজন্য অনলাইনে হোটেল বুকিংয়ের পথ বেছে নিচ্ছেন। আর সেখানেই ফাঁদ পাতছে প্রতারকরা। সম্প্রতি কলকাতার অনেকেই এইভাবে হোটেল বুকিংয়ের নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এই অবস্থায় অনলাইনে হোটেল বুকিং নিয়ে ভ্রমণপিপাসুদের সতর্ক করছে কলকাতা পুলিশ।

আরও পড়ুন: ভুয়ো ওয়েবসাইট চেনার ৪ সহজ পন্থা! জানা থাকলে প্রতারণার ভয় কমবে

কোনও সার্চ ইঞ্জিনে কোনও হোটেলের সন্ধান পেলে মানুষ সেগুলিতে যাতে অগ্রিম বুকিং না করেন, তার জন্য সতর্ক হতে বলেছে পুলিশ। লালবাজারের গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, বহু মানুষ এখন থেকে পুজোয় দার্জিলিং থেকে শুরু করে কাশ্মীর, কন্যাকুমারী ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। সেইমতো বিভিন্ন হোটেল বুকিং শুরু করেছেন মানুষ। অনেক সময় কোনও হোটেলের ওয়েবসাইট না মিললে সার্চ ইঞ্জিনে সেই হোটেলের সন্ধান করছেন ভ্রমণপিপাসুরা। তাতে বেরিয়ে আসছে একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইট। অথচ সেখানে হোটেলের ছবি রয়েছে এবং ঝকঝকে ওয়েবসাইট। যা দেখে মনে হচ্ছে না যে সেটি ভুয়ো। 

সেখানে আগাম বুকিংয়ের সুবিধাও থাকছে। আর আগাম বুকিং করতে গিয়ে টাকা খোয়া যাচ্ছে বহু মানুষের। কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫,০০০ টাকা আবার কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০,০০০ টাকা নিমেষে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু ওয়েবসাইটে হোটেলের হেল্পলাইন নম্বরও দেওয়া থাকছে। সেই হেল্পলাইনে ফোন করলে আবার বেশ কয়েকজন কথা বলে হোটেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিচ্ছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে হোটেলের ওয়েবসাইটে ঢুকলে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসছে। ট্রু কলারেও হোটেলের নাম ভেসে উঠছে। ফলে ওয়েবসাইটটি ভুয়ো নাকি, আসল তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব হচ্ছে না।

সম্প্রতি এরকম প্রতারিত হয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার এক বাসিন্দা। তাঁকে বুকিংয়ের ৫০ শতাংশ টাকা হিসেবে ৮,০০০ টাকা বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠাতে বলা হয়েছিল। সেইমতো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৮,০০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। এরপর তাঁকে ১০ টাকার লেনদেন করতে বলা হয়। কিন্তু, ১০ টাকার লেনদেন করলে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়।

ওই ব্যক্তি হোটেলের নম্বরে ফোন করলে হোটেলের তরফ থেকে তাঁকে জানানো হয় ভুলবশত ওই টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। তখন তাঁকে আরও ১০ টাকা পাঠাতে বলা হয়। তিনি সেই টাকা পাঠাতে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আরও ১৯,০০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। সবমিলিয়ে ওই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৪৬,০০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। এই প্রতারণার সঙ্গে হোটেলের কর্মীরাও জড়িত থাকতে পারেন বলে মনে করছে পুলিশ।