Brain Eating Amoeba Know About This Disease Cause Symptoms Other Details

তিরুবনন্তপুরম:মানুষের মস্তিষ্ক কুরে কুরে খাওয়াই তাদের প্রধান ‘ধর্ম’। কোনও রাক্ষস-খোক্ষস নয়, এমন ভয়ঙ্কর অ্যামিবার সংক্রমণের জেরে প্রাণ হারাল ১৫ বছরের এক কিশোর। কেরলের আলাপুঝা জেলার বাসিন্দা ওই কিশোর ‘নেইগেলেরিয়া ফাউলেরি’ (Naegleria fowleri) বা সহজ কথায় ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’ (brain eating amoeba) সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিল বলেই জানিয়েছে কেরল (Kerala Boy Death) প্রশাসন। সপ্তাহখানেক ধুম জ্বর, সঙ্গে শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূচক একেবারে এলোমেলো হয়ে যায় এই সংক্রমণে। তাকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ডাক্তাররা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

কী ঘটেছিল?
প্রশাসন জানতে পেরেছে, ওই কিশোর, বাড়ির কাছেই একটি ঝর্নায় স্নান করত। সম্ভবত সেখান থেকে তার দেহে অ্যামিবার সংক্রমণ ঘটে। প্রাকৃতিক পরিবেশে, বিশেষত উষ্ণ জলে এই অ্যামিবার বাড়বৃদ্ধি হয়। তবে নোনা পরিবেশে এরা বাঁচতে পারে না। তাই সমুদ্রের জল নয়, হ্রদ ও নদীর জলেই বংশবিস্তার করে এরা। এক্ষেত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ইঙ্গিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ‘নেইগেলেরিয়া ফাউলেরি’ বহু সময় ধরে প্রকৃতিতে বেঁচেবর্তে রয়েছে। কিন্তু মানবদেহে এর সংক্রমণের হার খুবই কম। হালের ইতিহাস বলছে, গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার এক বাসিন্দা এবং মার্চে ফ্লরিডার এক বাসিন্দা এই সংক্রমণে প্রাণ হারান। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন, গ্রীষ্মের সময় এই অ্যামিবার বংশবৃদ্ধির পক্ষে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। 

মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা সম্পর্কে টুকিটাকি…
এককোষী এই প্রাণী সাধারণত, হ্রদ, উষ্ণ প্রস্রবণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে থাকা সুইমিং পুলে বাড়বৃদ্ধি ঘটায়। মাইক্রোস্কোপ ছাড়া একে দেখা সম্ভব নয়। অ্যামিবাটির অনেকগুলি প্রজাতি রয়েছে। তবে শুধুমাত্র ‘নেইগেলেরিয়া ফাউলেরি’ -ই মানবদেহে সংক্রমণ ঘটায়। এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয়। কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির দেহ থেকে অন্য কারও দেহে এটির সংক্রমণ ছড়ায় না। 

কী ভাবে সংক্রমণ?
সাধারণত নাকের মধ্যে দিয়ে দেহে প্রবেশ করে এই মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি একটি প্রাণঘাতী সংক্রমণের শিকার হন যার নাম ‘primary amebic meningoencephalitis (PAM)’। ট্রোপোজাইট পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার পর অ্যামিবা নিজে শেষের পথে এগিয়ে গেলেও একবার যদি সে সিস্টে পরিণত হয়ে যায়, তা হলে তা যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বেঁচে থাকতে পারে। সাধারণত উষ্ণ জায়গায়, বিশেষত গ্রীষ্মকালে ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’-র বাড়বৃদ্ধি হয়। সুইমিং পুল ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ না হলে সেখানে এই ধরনের অ্যামিবা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে পুলের জলে ‘ডাইভ’ দিলে অ্যামিবা-সংক্রমিত জল নাক পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। ছড়াতে পারে সংক্রমণ। 

কী উপসর্গ?
সাধারণত সংক্রমণের এক সপ্তাহের মধ্যে তীব্র মাথাব্যথা, জ্বর, বমিভাব,ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বিভ্রান্তি, হ্যালুসিনেশন এবং খিঁচুনি জাতীয় সংক্রমণ দেখা দেয়। সময় যত এগোয়, রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি কোমাতেও চলে যেতে পারেন। এবং শেষ পরিণতি মৃত্যু। দ্রুত চিকিৎসা হলে বাঁচার সম্ভাবনা আছে ঠিকই, তবে তার হার খুবই কম। তাই চিকিৎসার থেকেও সংক্রমণ প্রতিরোধেই বেশি জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যেমন, না জেনে যে কোনও ধরনের উষ্ণ প্রস্রবণ, হ্রদ বা পুকুরে স্নান নয়। যদি সেগুলি ক্লোরিন দিয়ে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয়, তবেই সেখানে নামা যেতে পারে। সাঁতার বা ডাইভিংয়ের সময় প্রয়োজনীয় ‘নোজ প্রোটেকশন’ নেওয়া, জল ব্যবহার ও খাওয়ার আগে এবং পরে সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধোয়া, পরিস্রুত জল দিয়ে নাক পরিষ্কার করা, এগুলিও মাথায় রাখা দরকার। কারণ এই রোগে চিকিৎসায় সেরে ওঠার আশা খুব কম, মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই আগাম সাবধানতা জরুরি।

আরও পড়ুন:লাশের সারি বাংলায় ! ৬০ নয় মাত্র ১৫ হাজার বুথে হাজির ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী, জানালেন রাজীব সিনহা

  

Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )

Calculate The Age Through Age Calculator