সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাজি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পরেই প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হয়েছে। এবার নড়েচড়ে বসল জাতীয় পরিবেশ আদালত। এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করল আদালত। জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহে পরিবেশ আদালতের তরফে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। এই মামলায় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের একাধিক দফতরকে যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র সরোবরে যজ্ঞের অনুমতি পরিবেশ আদালতের, সুপ্রিম কোর্টে যাবেন পরিবেশ কর্মীরা
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবেলা দফতর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস সেফটি অর্গানাইজেশন সহ একাধিক পক্ষকে এই মামলায় যুক্ত করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। সম্প্রতি, এগরা, বজবজ এবং মালদহে বেআইনি বাজি মজুত রাখার ফলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে বেআইনি বাজি মজুত রাখা হল? ঘটনার পর থেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? রাজ্যে কতগুলি বেআইনি বাজি কারখানা রয়েছে? কত বাজি উদ্ধার হয়েছে? বা কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে? সেই সংক্রান্ত বিষয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে একাধিক জায়গায় একের পর এক বাজি বিস্ফোরণের ঘটনার পরেই বেআইনি বাজি মজুত রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী পরিবেশবান্ধব বাজি ছাড়া অন্য কোনও শব্দ বাজি নিষিদ্ধ তা সত্ত্বেও রাজ্যের একাধিক জায়গায় প্রকাশ্যে বেআইনি কারখানা গড়ে উঠল? তা নিয়ে রীতিমত অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে বিরোধী দলগুলিও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছে।
উল্লেখ্য, বেআইনি বাজি কারখানা উচ্ছেদ করার জন্য বাজি তৈরির ক্লাস্টার গড়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সিদ্ধান্ত হয়েছিল কালীপুজোর আগে রাজ্যে ১৮টি বাজি ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। কিন্তু, জমি জটের কারণে সেই সমস্ত ক্লাস্টার তৈরির কাজ আপাতত আটকে রয়েছে। তাছাড়া, জমির দাম দেওয়া নিয়েও বাজি ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
বাজি ক্লাস্টার তৈরির জন্য ৬ একর বা ১৯২ কাঠা জমির প্রয়োজন। এরজন্য বাজি ব্যবসায়ীদেরকেই জমি খুঁজতে বলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, এত জমি কোথায় পাবেন বাজি ব্যবসায়ীরা? তানিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তার ওপর ক্লাস্টার তৈরির জন্য জমির দাম কে দেবে? তাও নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা হয়নি বলে অভিযোগ বাজি ব্যবসায়ীদের। আগামী ১৭ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।