মাছ খাওয়ায় বিবেকানন্দকে আক্রমণ, রামকৃষ্ণকে অপমান, সন্ন্যাসীকে কড়া শাস্তি ইসকনের

মাছ খাওয়া নিয়ে স্বামী বিবেকানন্দের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। ‘গীতা পাঠের থেকে ফুটবল খেলা ভালো’ মন্তব্য নিয়ে করেছিলেন বিতর্কিত মন্তব্য। পরমহংস রামকৃষ্ণদেবের ‘যত মত, তত পথ’ উক্তি নিয়েও অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন। সেজন্য এবার শাস্তির মুখে পড়লেন সন্ন্যাসী অমোঘ লীলা দাস। ইসকন সূত্রে খবর, তাঁকে এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সম্পূর্ণ নির্জন জায়গায় থাকতে হবে বলে ইসকন সূত্রে খবর।

আরও পড়ুন: Swami Vivekananda: স্বামীজিকে নিয়ে কিছু বক্তব্য রাখতে চলেছেন স্কুল-কলেজে? রইল একগুচ্ছ উদাহরণ

সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত পরিচিত মুখ সন্ন্যাসী অমোঘের একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে যায়। যে ভিডিয়ো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকেন নেটিজেনদের একাংশ। বিশেষত স্বামী বিবেকানন্দ এবং রামকৃষ্ণ পরহংসদেবকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় বাঙালিরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্যও অনেকে তুলতে থাকেন। সেই বিতর্কের মধ্যেই ইসকন সূত্রে খবর, সন্ন্যাসী অমোঘকে এক মাসের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ নির্জন জায়গায় তাঁকে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইসকন কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে জনসমক্ষেও আসা যাবে না বলে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: Swami Vivekananda top quotes: আজও উদ্বুদ্ধ করে দৃপ্ত বাণী, বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে ফিরে দেখা সেই সব বার্তা

কী বলেছিলেন সন্ন্যাসী অমোঘ?

একটি ভাইরাল ভিডিয়োয় সন্ন্যাসী অমোঘকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘যদি কেউ মাছ খান, ধূমপান করেন, তাহলে তিনি ভুল করেছেন না? দেখুন (স্বামী বিবেকানন্দ) দিব্যপুরুষ ছিলেন কিনা, সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু কোনও দিব্যপুরুষ কি কখনও কোনও জানোয়ারকে হত্যা করে খাবেন? উনি কি মাছ খাবেন? মাছের কষ্ট হয়। যদি বিবেকানন্দ মাছ খেতেন….তাহলে কোনও সিদ্ধপুরুষ কি মাছ খেতে পারেন? সিদ্ধপুরুষের হৃদয়ে করুণা থাকে।’ সঙ্গে সন্ন্যাসী অমোঘ বলেছিলেন, ‘ভগবত গীতার (পাঠের) থেকে ফুটবল খেলা বেশি ভালো (বলেছিলেন বিবেকানন্দ)..এটা কি ঠিক? না, এটা ঠিক নয়।’

সন্ন্যাসী অমোঘ দাবি করেন, স্বামী বিবেকানন্দ যা করেছেন, সেটার জন্য সামনে থাকলে তাঁকে প্রণাম করতেন। কিন্তু অন্ধভাবে স্বামী বিবেকানন্দকে মেনে নেবেন না। তাঁর কথায়, ‘যেটা প্রশংসা করার জিনিস, সেটা প্রশংসা করা উচিত। আমিও প্রশংসা করছি। কিন্তু যেটা মেনে নেওয়া যায় না, সেটা মানা যায় না। যেমন – তুলসির থেকে বেগুন খাওয়া বেশি ভালো বলা হয়েছিল। কারণ বেগুনে পেট ভরে। আরে ভাই, বেগুন তৈরি কর। তুলসি পাতা দিয়ে ভোগ বানাও। দিয়ে খেয়ে নাও। কিন্তু তুলসির থেকে বেগুন ভালো – সেটার কোনও মানে হয় না। ফুটবল খেললে টিম স্পিরিট গড়ে ওঠে। গীতা পড়লে সেটা হয় না। তাহলে ভাই তিন ঘণ্টা ফুটবল খেলে নাও। তারপর ৩০ মিনিট গীতা পাঠ কর। এটা করতে পারি তো? কিন্তু গীতাপাঠের থেকে ফুটবল খেলা বেশি ভালো মন্তব্য করা ঠিক নয়।’

শুধু স্বামী বিবেকানন্দ নন, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকেও আক্রমণ করেন সন্ন্যাসী অমোঘ। তিনি বলেন, ‘যত মত, তত পথ। কেউ যদি বলেন, আমায় যদি অস্ট্রেলিয়ায় যেতে হয়, তাহলে কীভাবে যাব? তাহলে বলে দেবেন, যত মত, তত পথ। যে রাস্তা দিয়ে যেতে ইচ্ছা করবে, সেই রাস্তা দিয়ে চলে যাও। (চরম তাচ্ছিল্যের সুরে) যত মত, তত পথ। সে আন্টার্টিকা পৌঁছে গেল। আলাস্কায় পৌঁছে গেল। ’