চাহিদা বাড়ছে শহর ও গ্রামে, ক্রমশই চাঙ্গা হচ্ছে অর্থনীতি

মন্দার পূর্বাভাস আপাতত মিলছে না দেশের অর্থনীতিতে। ভারতীয় অর্থনীতি গত বছর থেকে চলতি অর্থবছরে কিছুটা হলেও গতিশীলতা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যা চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বর্ষে মন্দার ইঙ্গিত দেয়। সম্প্রতি জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (NSO) দ্বারা প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ সালের প্রকৃত জিডিপি বেড়ে ৭.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে,যা আগাম অনুমান করা ৭ শতাংশের চেয়ে বেশি৷ ২০২২-২৩ অর্থ বর্ষে জিডিপির ঊর্ধ্বমুখী চলন নিয়ে আশাবাদী অর্থনীতিবিদদের একাংশ। 

‘শেষ তিন মাসের এক শক্তিশালী পারফরম্যান্সে ভর করে সারা বছরের জিডিপি বৃদ্ধি ঘটছে ৭.২ শতাংশ পর্যন্ত, যা ফেব্রুয়ারিতে অনুমান করা ৭ শতাংশের চেয়ে বেশি। আগাম অনুমান পাল্টে যাওয়ার ফলে চলতি বছরে জিডিপি’র গতি বৃদ্ধি পেয়েছে’ এমনটাই বলছে অর্থ মন্ত্রক। বর্তমানে বেশ কয়েকটি পূর্বাভাসকারী সংস্থা আশাবাদী চলতি বছরে অর্থনৈতিক গতি বজায় থাকার বিষয়ে। তারা ২০২৩-২৪ অর্থ বর্ষে ভারতের প্রেক্ষিতে জিডিপি ও অর্থনৈতিক গতির ধারাবাহিক বৃদ্ধি আশা করছেন। 

অর্থমন্ত্রক আরও জানায়, ‘সর্বশেষ তথ্যগুলিও চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে কার্যকলাপের কোন ধীরগতির ইঙ্গিত দেয় না। ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত অগ্রগামী অর্থনীতির দেশ, এটি এখন আর পরিসংখ্যা নয়, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে।’

অর্থ মন্ত্রক বলছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদার বৃদ্ধিই ভারতের অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে। উচ্চ ঘনত্বের সূচকগুলি অর্থনীতির অবস্থার একটি উন্নত চিত্র নির্মাণ করেছে। অটো বিক্রয়, জ্বালানি খরচ, এবং ইউপিআই লেনদেনের ক্ষেত্রে বৃদ্ধির সাথে শহরের অন্যান্য চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামীণক্ষেত্রেও চাহিদা বেড়েছে আগের তুলনায়। দুটি চাকা ও তিন চাকার গাড়ি বিক্রিও চাঙ্গা করেছে অর্থনীতিকে।

কৃষি ক্ষেত্রেও স্থিতিশীল অবস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই বছর এল নিনোর প্রভাব থাকার পূর্বাভাস থাকলেও এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক বর্ষা পরিলক্ষিত হয়েছে দেশজুড়ে। বীজ এবং সারের পর্যাপ্ত প্রাপ্যতা এবং জলাশয়ে পর্যাপ্ত জল থাকায় আশা করা হচ্ছে খারিফ শস্য উৎপাদনে কোনও বাধা থাকবে না। প্রসঙ্গত, ভারতে তিনটি ফসলের ঋতু রয়েছে – গ্রীষ্ম, খারিফ এবং রবি। এর মধ্যে খারিফ মরসুমের ওপরই নির্ভর করে অধিকাংশ চাষবাস। জুন-জুলাই মাসে খারিফ শস্য বপন করা হয় ও অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কাটা হয়। বর্ষার স্বাভাবিক ছন্দ বজায় থাকলে গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি কৃষিক্ষেত্রও নিরাশ করবে না এই বছর।