পঞ্চায়েতে ভোটকর্মীর মৃত্যুতে কমিশনকেই দায়ী করল সরকারি কর্মীদের সংগঠন

পঞ্চায়েত ভোটের দিন কর্তব্যরত এক ভোট কর্মীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক ভোট কর্মী। বুধবার সেই ভোট কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পেশায় স্কুল শিক্ষক ওই ভোট কর্মীর নাম রেবতীমোহন বিশ্বাস। নদিয়ার করিমপুরের ১ নম্বর ব্লকের ১৩৪ নম্বর বুথে কর্তব্যরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই রিজার্ভ প্রিজাইডিং অফিসার। এবার তাঁর মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনকেই দায়ী করল সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।

আরও পড়ুন: সবুজ ঝড়ে লাল রক্তের স্রোত, রায়দিঘিতে ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত তৃণমূল কর্মী

মঞ্চের আহবায়ক ভাস্কর ঘোষ দাবি করেছেন, নির্বাচনের দিন বুথে বুথে অশান্তি, হিংসা দেখা গিয়েছে। তার জেরে কার্যত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন ভোট কর্মীরা। তেমনি নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওই ভোট কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি মানসিক চাপ নিতে পারেননি। তাঁর মৃত্যুর জন্য দায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। যদিও এ বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি স্থানীয় বিডিও অনুপম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘যা বলার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে বলব।’

জানা গিয়েছে, ওই ভোট কর্মী নদিয়ার বাসিন্দা। তিনি হাঁসপুকুরিয়া বিদ্যাপীঠের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ভোটের দিন সেরিব্রাল অ্যার কারণে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে সেখানে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মঞ্চের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন তিনি। বুথে ঢুকতে ভয় পাচ্ছিলেন। কিন্তু বিডিও তাঁকে ধমকে জোর করে ভিতরে ঢুকিয়েছিলেন। যদিও পরিবারের তরফে এই ধরনের অভিযোগ করা হয়নি। তবে তাঁরা চিকিৎসা না করানোর অভিযোগ তুলেছেন। জানা গিয়েছে, প্রথমে রিজার্ভ ছিলেন রেবতী বাবু। পরে তিনি প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছন। প্রায় ১২০০ ব্যালট পেপারে সই করিয়ে রাত ৩ টা নাগাদ তিনি ঘুমাতে গিয়েছিলেন। ভোটের দিন সকালে সহকর্মীরা তাঁকে ডাকতে গিয়ে দেখেন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছেন। তাঁর স্ত্রী সোমা বিশ্বাসের অভিযোগ, প্রশাসন মোটেই ভালো কাজ করেনি। প্রথম থেকে প্রশাসন এ বিষয়ে দেখলে এই ধরনের কিছু ঘটত না।

তৃণমূল বিধায়ক বিমলেন্দু রায় বলেন, ‚ভোট যেমন করাতে হবে তেমনি কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয় দেখতে হবে। এর জন্য কে দায়ী তা নির্বাচন কমিশন খতিয়ে দেখবে।’ এই মৃত্যুর জন্য বিজেপি বিডিওকে দায়ী করেছে। বিজেপির করিম্পুরের সভাপতি সুব্রত পালের অভিযোগ, বিডিওর অমানবিক আচরণের কারণে ওই ভোট কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সিপিএমও এরজন্য বিডিওকে দায়ী করেছে। তাদের বক্তব্য, অসুস্থ কোনও ব্যক্তিকে ভোটের কাজে পাঠিয়ে অমানবিক আচরণ করেছেন বিডিও।