সবজি ও মাছের বাজার চড়া, কমেছে আদা-পেঁয়াজ-সয়াবিন তেলের দাম

সবজির বাজার ঈদের পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাছের দাম। কোরবানির ঈদের পর মাছের চাহিদা বাড়তেই দামও বাড়তে শুরু করেছে। মাছ কিনতে এসে এই মূল্যদ্ধি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

সবজি আর মাছের বাজারে অস্বস্তি থাকলেও কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, আদা, আটার মতো নিত্যপণ্য। গত সপ্তাহের তুলনায় এই পণ্যগুলোর দাম কমেছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম এখনও রয়েছে অস্থিতিশীল। কখনও বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়, আবার কখনও ৪০০ টাকায়।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) মিরপুর-১ নম্বরের কাঁচা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ৬০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই। লম্বা বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করল্লা ১২০ টাকা, উচ্ছে ১০০, পেপে ৬০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ৩২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা,  ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা,  ধুন্দল ৮০-৯০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ কেজি, লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা পিস।

বাজার করতে আসা ফাহিম বলেন, ঈদের পর থেকেই দেখছি সবজির দাম বেশি। এখনও সেটা কমেনি। সবজির দাম অনেক বেড়ে গেছে। 

বিক্রেতারা বলেছেন, দেশের অনেক জায়গায়ই পানি বেড়ে গেছে। বন্যার মতো অবস্থা, তাই সবজির দাম এখন বাড়তি।

সবজি বিক্রেতা রাজিব হোসেন বলেন, গতকাল কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছি ২৬০-২৮০ টাকা। আর আজ বিক্রি করছি ৪০০ টাকা কেজি। এটার দামের কোনও ঠিক-ঠিকানা নাই।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার কথা বলে বেশি রাখা হচ্ছে সবজির দাম

এছাড়া আজ দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আদা ২০০-২৪০ টাকা, দেশি রসুন ১৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আদা-রসুন বিক্রেতা শরীফ বলেন, আদার দাম কমেছে। আজ বিক্রি করছি ২০০-২৪০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৩৬০ টাকা। পেঁয়াজের দামও কমেছে কিছুটা। আজ দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি করছি। যা আগে ছিল দেশি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ , ক্রস জাতের ৭০-৭৫ টাকা।

৬০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই বাজারে

এছাড়া আজ বাজারে ইলিশ মাছ ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০-৪৫০, কাতল মাছ ৪০০-৫০০, চিংড়ি মাছ ৯০০, কাঁচকি মাছ ৫০০, টেংরা মাছ ৮০০, কৈ মাছ ২৫০, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০- ৬৫০, বেলে মাছ ৯০০-১০০০ টাকা, কাজলী মাছ ১৪০০ টাকা কেজি। আর ব্রয়লার মুরগি ১৬৫-১৭৮, পাকিস্তানি বা কক মুরগি ২৫২-২৬০, দেশি মুরগি ৫৫০, গরুর মাংস ৭৮০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পেশায় চিকিৎসক ডা. হযরত এলাহী এসেছিলেন বাজার করতে। তিনি বলেন, আমি টেংরা মাছ ৮০০ টাকা, কাজলী ১৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ৪০০ টাকা কেজি করে কিনেছি। সব মাছের দামই দ্বিগুণ বেড়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।  আসলে কোরবানির ঈদের সময় মানুষের মাংস বেশি খাওয়া হয়। তাই ঈদের পরে যখন মাছের চাহিদা বাড়ে তখনই দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা।

মাছের ব্যবসায়ী শিপন বলেন, আজ মাছের দাম একটু বেশি আছে। শুক্রবার বলে দাম বেশি।

কোরবানির ঈদ চলে যাওয়ায় কমে গেছে আদা ও পেঁয়াজের দাম

এদিকে মুদি দোকানে বিভিন্ন পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। কমেছে সয়াবিন তেল ও আটার দাম। আজ বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি দাম ১৬৯ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। আর আটার দাম (দুই কেজির প্যাকেট) আজ ১২০ টাকা।  যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা।

এছাড়া মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, খোলা ময়দা ৬৩ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই

সেলিম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, বুধবার দাম কমে সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৯ টাকা হয়। তবে বাজারে এখনও নতুন রেটের তেল আসেনি। তার আগে তেলের দাম ছিল ছিল ১৯০ টাকা। আটার দাম কমেছে, দুই কেজির দাম এখন ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা।

ছবি: প্রতিবেদক।