২২ শতাংশ পড়ল রফতানি, তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন

বিশ্বজনীন মন্দার প্রভাব এবার ভারতের রফতানি ক্ষেত্রেও। মন্দার কারণে বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস পেয়েছে বিশ্বের কম বেশি বহু দেশেই। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মতো পশ্চিম দুনিয়ার বাজারগুলিতে ভারতের রফতানি আগের তুলনায় ২২ শতাংশ কমেছে। গত তিন বছরের মধ্যে রফতানি সর্বোচ্চ হ্রাস পেয়েছে এই বছর জুন মাসে ৩২.৯৭ বিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকেছে৷ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রফতানি ও আমদানি হ্রাসের কারণে চলতি বছরের জুনে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ২০.৩ বিলিয়ন ডলার। তুলনামূলক বিচার করলে দেখা যাবে, গত বছরের একই মাসে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২২.০৭ বিলিয়ন ডলার।

জুন মাসে অন্তর্মুখী শিপমেন্ট ১৭.৪৮ শতাংশ কমে ৫৩.১০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। ২০২০ সালের মে মাসে রফতানি ৩৬.৪৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল, যখন বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপ চলছিল। আগেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) বিশ্ব বাণিজ্য ক্ষেত্রে মন্দার পূর্বাভাস দিয়েছিল, সেই আশঙ্কাই কিছুটা সত্যি হচ্ছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে বৃদ্ধি হ্রাসের কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশগুলিতে মন্দার প্রভাব রয়েছে। মন্দার সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি চাপ।

 কমার্স সেক্রেটারি সুনীল বার্থওয়াল বলে, বাণিজ্যের উন্নতি কিংবা পতন সম্পূর্ণই নির্ভর করে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন নির্ণায়কের ওপর। তিনি আরও বলেন, ধনী দেশগুলির অর্থনৈতিক নীতিগুলি কঠোর করার জন্য অনেকাংশে উৎপাদন এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়েছে। ভারতের রফতানি উন্নয়ন পরিষদ আশা করছে, আগামী মাসগুলোতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে এবং চাহিদাও বাড়বে। ‘জুলাই থেকে রফতানির চাহিদা উর্ধ্বমুখী হওয়া উচিত’ বলেন এক কর্মকর্তা।

রফতানি কমার সঙ্গে সঙ্গে জুন মাসে ভারতের আমদানিও কমেছে ১৭.৪৮ শতাংশ। সে মাসে আমদানি হয়েছে ৫ হাজার ৩১০ কোটি ডলারের পণ্য। এর ফলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে ২ হাজার ৩০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। বহু উল্লেখযোগ্য লাভজনক খাতে রফতানি কমেছে। পাথর ও স্বর্ণালংকারের ক্ষেত্রে রফতানি হ্রাস হয়েছে ৩৩ শতাংশ, টেক্সটাইল ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ, যন্ত্রপাতি ও উপকরণের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ, রাসায়নিক দ্রব্যে ২৪ শতাংশ ও ট্রান্সপোর্ট উপকরণের ক্ষেত্রে ২২ শতাংশ কমেছে রফতানি। ব্যাতিক্রম কেবল ওষুধ রপ্তানি। জুন মাসে কেবল ওষুধের রফতানি বেড়েছে চার শতাংশ। 

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, প্রধান ৩০টি রফতানি খাতের মধ্যে ২১টিতেই জুন মাসে রফতানি কমেছে। জুলাই থেকে এই অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।