পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিচার প্রক্রিয়ায় অনুমোদন রাজ্যপালের, ট্রায়ালে আর বাধা রইল না

আবার সক্রিয় হয়ে উঠলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীন রাজ্যপালকে যথেষ্ট সক্রিয় দেখা গিয়েছিল। এবার সেই নির্বাচন শেষ হতেই উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ট্রায়ালে অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সুতরাং এখন আবার তিনি জোরদার সক্রিয়তা দেখাতে শুরু করলেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিচার প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যেকোনও সরকারি ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অনুমোদন ছাড়া আদালতে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। এবার তাতে রাজ্যপালের সম্মতি মেলায় সিবিআই তদন্তের অগ্রগতিতে আর কোনও বাধা রইল না।

এদিকে এক বছর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (‌ইডি)‌ হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে সিবিআই। তবে তাঁর বিচারের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। এবার সেই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিচার প্রক্রিয়া যাতে কোনওভাবে বাধা না পায় তার জন্যই এই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল। ভারতীয় সংবিধানের ১৬৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী নিজের সংবিধানিক অধিকারের জোরে এই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তখন রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। তাই পার্থের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হলে বিধানসভার অধ্যক্ষের পাশাপাশি রাজ্যপালের অনুমোদনও প্রয়োজন।

অন্যদিকে সিবিআই সেই অনুমোদন চেয়েছিলেন রাজ্যপালের কাছে। তাতে সম্মতি দেন বড়লাট। অনুমোদনপত্রে সই করেছেন রাজ্যপাল। এক বছর ধরে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ করা হয়েছে। তিনি বারবার জামিন চাইলেও তা মেলেনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও একই মামলায় জেলে আছেন আরও দুই তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং জীবনকৃষ্ণ সাহা। তাঁদেরও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পার্থর বিরুদ্ধে নানা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে সিবিআই। তা আদালতে পেশ করা হয়েছে। এবার রাজ্যপালের এই সম্মতি মেলায় বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌রাজনৈতিক উদ্দেশে আদালতকে ব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে’‌, ক্ষোভ প্রধান বিচারপতির

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ ২০২২ সালের ২৩ জুলাই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে। তার পর থেকে শুনানি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন পার্থবাবু। কিন্তু যখন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখন তিনি ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। তাই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্যপালের এই অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। সেই অনুমোদন এবার মিলে গেল। ফলে চার্জশিট পেশ করার পরে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে সাংবিধানিকভাবে আর কোনও বাধা রইল না। আগেও দেশের অন্যান্য রাজ্যে কোনও ক্যাবিনেট মন্ত্রীর বিচার প্রক্রিয়ায় রাজ্যপালের অনুমোদন দেওয়ার ঘটনা আছে।