বেসরকারিকরণের খাঁড়া মাথায়, সরব হল ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন

ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন (এআইবিওসি) মঙ্গলবার জানিয়েছে, সমাজে আর্থিক বিভাজন বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ‘বেসরকারিকরণের বিপদে’ রয়েছে। বুধবার ভারতের ৫৫ তম ব্যাংক জাতীয়করণ দিবস। গুয়াহাটির সদর দফতর থেকে সংস্থাটি জানিয়েছে, ১৯৬৯ সালে জাতীয়করণের পর থেকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং সঞ্চয়ে উৎসাহ দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

কিন্তু বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি প্রকৃতই বেসরকারিকরণের বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। এআইবিওসি’র সাধারণ সম্পাদক রূপম রায় বলেন, এটি একটি আদর্শগত দ্বন্দ্ব। বৃহত্তর মানব জনগোষ্ঠীর কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া যদি লক্ষ্য হয়, তবে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, জাতীয়করণের পর থেকে এই পাবলিক ব্যাঙ্কিং সেক্টর কৃষি ক্ষেত্রে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, শিক্ষা ও পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করছেন। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কগুলি অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্তম্ভ, যা দেশের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। লক্ষ লক্ষ ভারতীয়কে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুযোগ করে দেয় এই পাবলিক ব্যাঙ্কগুলি।

এআইবিওসি অভিমত, আয়বৈষম্য সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠায় পাবলিক সেক্টরের ব্যাঙ্কগুলি অর্থনৈতিক বিভাজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিবৃতিতে রায় বলেন, সরকার যেহেতু রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রধান শেয়ার হোল্ডার, তাই ব্যাঙ্কগুলির মোট মুনাফা বা লভ্যাংশ থেকে সবথেকে বেশি অর্থ লাভ করে ভারত সরকার। তিনি আরও জানান, এসবিআই-এর ক্ষেত্রে একজন কর্মী পিছু গ্রাহকের সংখ্যা ১,৯০০, অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি যেমন এইচডিএফসি-র ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ৫৩০ এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ৩২৫। অর্থাৎ পরিসংখ্যান থেকেও স্পষ্ট হয় বাস্তবে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এখনও ভরসা করে সরকারি রাষ্ট্রায়াত্তব্যাঙ্কগুলিকেই।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কর্মীরা দেশের মানুষের মূল্যবোধকে সম্মান দিতে জানেন এবং নাগরিকদের পরিষেবা দিতে দায়বদ্ধ। তিনি আরও বলেন, পালবিক ব্যাঙ্ক সেক্টরের কর্মীরা বিভিন্ন অর্থনৈতিক পর্যায় প্রত্যক্ষ করেছেন, নমনীয়তার সাথে তা মোকাবিলাও করেছেন। কোভিডের সংকটময় সময়ে কিংবা দুর্যোগের সময়ও নিরবচ্ছিন্নভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালিয়ে গেছেন তারা।

রায় উল্লেখ করেন, তাদের অধ্যবসা ও নিরন্তন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্যাংক কর্মচারীরা বহু সমস্যার সম্মুখীন হন। তিনি জোর দেন ব্যাঙ্কিং সেক্টরে নিয়োগ না হওয়ার দিকটিতে। এর ফলে কর্মচারীরা নানান সময়ে বিপুল চাপে পড়েন বলে জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক।