নিউ টাউনে বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে বিষধর সাপের ছোবলে মৃত্যু ছাত্রী

বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে বিষধর সাপের ছোবলে মৃত্যু হল ছাত্রীর। ফের সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল নিউটাউনে। ওই ছাত্রীর নাম অনীশা নস্কর। সে নিউ টাউউন টেকনোসিটি থানার আনন্দ কেশরীর বাসিন্দা। সাপের কামড়ের পর তাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এনিয়ে পরপর দুদিন সাপে কামড়ে মৃত্যু হল দুজনের। এখনও পর্যন্ত বর্ষার মরশুমে সেখানে সাপের কামড়ানোর মৃত্যু হল তিনজনের। এই ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। রীতিমতো সাপের কামড়ে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন নিউ টাউনের বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, এর আগের দিন সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। তিনিও আনন্দ কেশরীর বাসিন্দা।

আরও পড়ুন: সাপে কাটা রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা, চিকিৎসককে মারধর, ভাঙচুর হাসপাতাল

কী ঘটেছিল?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিশা দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছুটিতে সে বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিল। সেই সময় আচমকায় একটি বিষধর সাপ তাকে ছোবল মারে। ঘটনায় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে ভাঙড়ের নলমুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙড়ে দাদুর বাড়িতে থাকত অনিশা। সেখানকার একটি হাই স্কুলে সে পড়াশোনা করত। 

প্রসঙ্গত, বর্ষা নামতেই নিউ টাউনে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। বিশেষ করে কালাজ, চন্দ্রবোড়ার মত সাপের উপদ্রব এই এলাকায় বেড়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন নিউটাউনের বাসিন্দারা। এমনকী বিভিন্ন আবাসনে অ্যান্টিভেনামও কিনে রাখা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু হওয়ায় উদ্বিগ্ন নিউ টাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটি। এ বিষয়ে সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাপের উপদ্রব বেশি হওয়ার কারণে ওই এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে অ্যান্টি ভেনাম রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে যাতে ২৪ ঘণ্টা সাপের কামড়ের চিকিৎসা করা হয় তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছেও অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

সাপের উপদ্রব নিয়ে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগের দিন সাপের কামড়ে যে যুবকের মৃত্যু হয়েছিল তিনি সাপুরজি এলাকায় একটি নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করতেন। সেখানেই একটি জলায় স্নান করতে নামলে সাপে কামড়ে দেয় ওই যুবককে। প্রথমে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেননি। পরে বাড়ি ফিরে তাঁর শরীরে জ্বালা যন্ত্রনা শুরু হয়।  আকন্দকেশরী থেকে তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ভাঙড়ের জিরানগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে ওই যুবককে আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় সৌরভের। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল সপ্তাহখানেক আগেই। উত্তর প্রদেশের এক ছাত্র নিউ টাউনের রাস্তায় সাপের কামড় খেয়েছিলেন। প্রথমে তাঁকে জিরানগাছা ও পরে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 

প্রসঙ্গত, সাপের কামড়ের চিকিৎসার জন্য নিউ টাউনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন আবাসনে চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স এবং স্নেক ক্যাচারের নম্বর সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু নিউ টাউন বিধানসভার বাইরে গ্রাম অঞ্চলে সাপে কামড়ানোর চিকিৎসা এখনও সেরকম ভাবে নেই বলেই অভিযোগ।