‘আমার মা’কে খুন করেছে বাবাই’ ছেলের সাক্ষীতেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চিকিৎসকের

প্রায় সাত বছর আগে পাঁচ বছরের ছেলের সামনেই স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন এক দন্ত চিকিৎসক। সে মামলায় বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছিল ছেলে। সে জানিয়েছিল, ‘আমার বাবাই মাকে খুন করেছে।’ শিশুর সাক্ষীর ভিত্তিতেই স্ত্রীকে খুনের অপরাধে ওই দন্ত চিকিৎসকের যাবজীবন কারাদণ্ড দিল মুম্বইয়ের একটি দায়রা আদালত। সোমবার আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক পি পি বাঙ্কার ভারতীয় দণ্ডবিধির খুনের ধারায় অভিযুক্ত দন্ত চিকিৎসককে দোষী সাব্যস্ত করেন। তারপরে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ওই দন্ত চিকিৎসকের নাম উমেশ বোবাল।

আরও পড়ুন: সাঁইথিয়ায় ঘর থেকে বৃদ্ধার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার, মুখে গোঁজা ছিল গামছা

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে। ঘটনার ছয় মাস আগেই তাঁদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছিল। তারপর উমেশ ছেলের সামনেই রান্নাঘরে ছুরি দিয়ে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী তনুজার গলা কেটে হত্যা করেছিল। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাত করেছিল। নিহতের শরীরে মোট ৩৪টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। তারপরেই খুনের অভিযোগে উমেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তনুজার বোন জবানবন্দিতে আদালতকে জানান, বিয়ের ছয় মাস পরেই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হতে শুরু করে। এ নিয়ে প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝামেলা হত। স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করত উমেশ। তাই নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াও হত। তনুজা গর্ভবতী হওয়ার পরে স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে উমেশের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ছেলের ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্যও জোরাজুরি করেছিল উমেশ। এরপরেই আদালতে বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য আবেদন জানায় ওই দম্পতি। কিন্তু, বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর খোরপোষের পরিমাণ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না উমেশ। তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। এরপরে উমেশ তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছিল।

এই মামলায় মোট ১০ জনের সাক্ষী নেওয়া হয়। মামলার প্রধান সাক্ষী ছিল দম্পতির ছেলে। ২০২০ সালে ওই শিশুর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। সেই সময় শিশুটি দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছিল। সাক্ষীতে ওই শিশু বিচারককে বলেছিল, ‘আমার বাবা মাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিল। তখন আমি চিৎকার করিনি কিন্তু আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’