Manipur BJP MLA ‘Tortured’: মণিপুরে BJP বিধায়ককে ‘ইলেকট্রিক শক’, ‘বাবার স্মৃতিশক্তি হারিয়েছে’, দাবি ছেলের

মে মাস থেকে জাতিগত হিংসায় জ্বলছে মণিপুর। শাসক বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের ওপর এই আবহে একাধিকবার হামলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির পার্টি অফিসেও হামলা চালানো হয়েছে। উত্তেজিত জনতার হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি বিধায়ক ভুংজাগিন ভাল্টে। অভিযোগ, তাঁকে নাকি ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছিল। তাঁর ওপর চলেছে অকথ্য অত্যাচার। ভাল্টের ছেলের দাবি, আক্রান্ত হয়ে বাবার স্মৃতিক্তি চলে গিয়েছে। বর্তমানে দিল্লিতে একটি ফ্ল্যাটে রেখে চিকিৎসা চলছে বিজেপি বিধায়কের। তাঁর পরিবার এতটাই আতঙ্কিত, যে তাঁরা দাবি করেছেন, ভবিষ্যতে আর ভাল্টেকে বিধানসভায় যেতে দেবেন না তাঁরা।

উল্লেখ্য, তিনবারের বিধায়ক ভাল্টের বয়স ৬০ বছরের ওপরে। তাঁর ওপর হামলার পরই তাঁকে বিমানে করে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছিল। অ্যাপোলো হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল তাঁকে। এই মাসের শুরুর দিকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। এরপর থেকে বিধায়কের পরিবার দিল্লির কালকাজি এক্সটেনশনের এক ভাড়া বাড়িতে আছেন তাঁকে নিয়ে। সেখানেই তিনি আস্তে আস্তে সেড়ে উঠছেন বলে দাবি পরিবারের। রিপোর্ট অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে ইম্ফলবাসীর সুরক্ষা নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন ভাল্টে। সেখান থেকে ফেরার পথেই জনতার রোষের মুখে পড়েছিলেন তিনি। বিধায়কের ছেলের দাবি, ‘বাবাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁর চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। তাঁকে পাশের এক কমিউনিটি হলে নিয়ে গিয়ে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়।’ তাঁর ছেলে জোসেফ বলেন, ‘আমরা ফিরে গিয়ে চূড়াচাঁদপুরে আমাদের বড়িতে যাব। তবে ইম্ফলে আমরা আর কোনওদিন পা রাখব না। তবে আমরা আশা করি, আমার বাবা যে দাম চুকোচ্ছেন, এবং মণিপুরের আরও হাজার হাজার মানুষ যে দাম চুকিয়েছেন, তার বদলে যেন শান্তি ফিরে আসে।’

উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। রেহাই পাচ্ছে না মহিলা ও শিশুরাও।

প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৫০ জন।