Smriti Irani: মণিপুরের ‘লজ্জা’ ঢাকতে বিরোধী শাসিত রাজ্য নিয়ে প্রশ্ন, নারী সুরক্ষা ইস্যুতে স্মৃতির ‘বুমেরাং’

বাংলা, রাজস্থানে মহিলাদের ওপর ঘটে চলা অত্যাচার নিয়ে কবে আলোচনা করবেন? বিরোধীদের পালটা প্রশ্ন স্মৃতি ইরানির। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি শাসিত মণিপুরে মহিলাদের ওপর অত্যাচারের বেশ কিছু ঘটনা সমানে এসেছে। যা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে গোটা দেশ। এই নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন বিরোধীরাও। আর এই আবহে এবার বিরোধীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘রাজস্থান, ছত্তিশগড়, বিহারের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যে মহিলাদের ওপর যে অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে আলোচনা করার শাহস কবে হবে বিরোধীদের?’

বুধবার রাজ্যসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে মণিপুর ইস্যু উত্থাপিত হয়। কংগ্রেস সাংসদ আমি ইয়াগনিক স্মৃতির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, মণিপুর ইস্যুতে কি মাননীয় মন্ত্রী মুখ খুলবেন? উল্লেখ্য, প্রাথমিক ভাবে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি প্রশ্ন করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। এরপর চেয়ারম্যানের অনুমতিতে একটি সাপ্লিমেন্টারি প্রশ্ন করেন কংগ্রেস সাংসদ। সেই সময়ই মণিপুর ইস্যুর উল্লেখ ঘটে। আর তার জবাবে পালটা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোর হাল তুলে ধরেন স্মৃতি ইরানি।

এদিকে বিষয় বহির্ভূত প্রশ্ন করায় রাজ্যসভর চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় জানিয়ে দেন, প্রশ্নটি সংসদের কার্যবিবরণীতে যুক্ত হবে না। তিনি ইয়াগনিকের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা অশোভন আচরণ, এটা অসদাচরণ। এটা আপনার ক্ষমতার অপব্যবহার।’ এরপর সংসদে দাঁড়িয়ে উঠে কংগ্রেস সাংসদরে আক্রমণ শানান স্মৃতি ইরানি। তিনি বলেন, ‘আমি এর তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি। কারণ মহিলা মন্ত্রী এবং মহিলা রাজনীতিবিদরা শুধু মণিপুর নয়, রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং বিহারেও কথা বলেছেন। রাজস্থান নিয়ে আলোচনা করার সাহস কবে পাবেন বলুন। ছত্তিশগড় নিয়ে আলোচনা করার সাহস কবে পাবেন আপনি? বিহারে কী ঘটছে তা নিয়ে আলোচনা করার সাহস কবে পাবেন… কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে মহিলারা কীভাবে ধর্ষিত হয় তা বলার সাহস কবে হবে? রাহুল গান্ধী কীভাবে মণিপুরে আগুন লাগিয়েছেন, তা বলার সাহস কবে পাবেন? এই মন্ত্রিসভায় নারী মন্ত্রীদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।’

উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর দিন থেকেই মণিপুর ইস্যুতে উত্তাল উভয় কক্ষ। সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগেই একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, দুই মহিলাকে নগ্ন অবস্থায় ঘোরানো হচ্ছে এবং মাঠের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ তিনজন কুকি মহিলাকে মৈতৈরা গণধর্ষণ করেছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৪ মে। তবে ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার আগে পর্যন্ত পুলিশের তরফে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পরে চাপের মুখে বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে মণিপুরের আরও বেশ কয়েকটি বিভীষিকাময় ঘটনার কথা সামনে আসে। মহিলাদের ধর্ষণ নিয়ে আলটপকা মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরন সিং। জাতিগত হিংসার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেরাজ্যে। আর এই গোটা পরিস্থিতির জন্য বিজেপির বিভাজনকারী রাজনীতিকেই দায়ী করছেন বিরোধীরা। এদিকে মণিপুর নিয়ে বাদল অধিবেশনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ খুলেছিলেন। তিনি সেই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়েছিলেন। তবে সংসদের ভিতরে মোদীর বিবৃতির দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই আবহে সংসদ প্রায় অচল থেকেছে গত কয়েকদন ধরেই।